ঢাকা : রোববার ১০ এপ্রিল । বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবজ্জ্বল দিন। একাত্তরের এ দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়।
একইসাথে প্রবাসী সরকার এক অধ্যাদেশ জারি করে আইনগতভাবে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে গ্রেপ্তার করে । ওই রাতেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, একাত্তরের ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের নির্বাচিত জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি গোপন স্থানে মিলিত হয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম কে উপ-রাষ্ট্রপতি (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ) নির্বাচিত করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম পরে তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন।
মন্ত্রী সভার অন্যান্য সদস্যরা হলেন, খন্দকার মোশতাক আহমদ (পররাষ্ট্র , আইন ও সংসদ), এম মনসুর আলী (অর্থ বানিজ্য ও শিল্প ) এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান (স্বারাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রান,পুর্নবাসন ও কৃষি) ।
এইচ টি ইমাম বলেন, ১০ এপ্রিল সরকার গঠনের পরে ১১ এপ্রিল স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাজউদ্দিন আহমদ একটি বেতার ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি দেশব্যাপি পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এছাড়াও ১৭ এপ্রিল মন্ত্রী সভার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়।
মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী গ্রাম বৈদ্যনাথ তলায় শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। শপথ গ্রহনের পরেই তাজউদ্দিন আহমদ এ স্থানের নাম দেন মুজিবনগর। পরবর্তি সময়ে প্রবাসী সরকার মুজিবনগর সরকার হিসাবেই পরিচিতি লাভ করে।
এদিকে ১৭ এপ্রিল মুজিব নগর সরকারের মন্ত্রীরা শপথ নিলেও ১৮ এপ্রিল মন্ত্রী পরিষদের প্রথম সভায় মন্ত্রীদের দপ্তর বন্টন করা হয়। মুজিব নগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।