সিলেট : সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত নান্দনিক স্থাপত্যের শহীদ মিনার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘সূর্যালোকে বর্ণমালা’। ২০১৫ সালে শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। খবর বাসস’র
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে এ শহীদ মিনার। প্রায় বিশ ফুট উঁচু টিলার উপর এটির অবস্থান। টিলার পাদদেশ থেকেই এর নান্দনিকতা যে কোনো দর্শনার্থীকে আকর্ষণ করবে। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলে দেখা যাবে পূর্ণাঙ্গ অবয়ব।
মূল চত্বরে অনেকগুলো খাড়া ও সরু দেয়াল বিভিন্ন উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে। দেয়ালগুলোর মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গাগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন বাংলা বর্ণ। পুরো স্থাপনাটি দেখে মনে হবে, যেন বর্ণমালার একতায় একতাবদ্ধ, প্রতিবাদমুখর।
শহীদ মিনারটা উত্তর পশ্চিমমুখী। উত্তর-দক্ষিণে পাঁচ ফুট উঁচু পাঁচিলে বর্ণমালা খচিত রয়েছে। আর স্থাপনাটা উত্তর-পশ্চিমমুখী হওয়ায় প্রতিদিন ভোরে এর পিছনে উদীয়মান লাল সূর্যের আবির্ভাব হয়, যেটি এর নান্দনিকতা বাড়িয়ে তোলে বহুগুণে। সকালে মিনারটি কিছুটা ছায়াচ্ছন্ন ও অস্পষ্ট দেখা যায়, দিনের বেলা রূপ হয় ঝলমলে। এ যেন বর্ণমালার বাগান। সবকিছু ভেবেই এটির নাম রাখা হয়েছে ‘সূর্যালোকে বর্ণমালা’।
জাতীয় দিবস উদযাপনসহ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান এ শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়।
সিকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি শামীম মোল্লা বলেন, ‘শহীদ মিনারে গেলে যেন প্রাণ পাই। যে ভাষার জন্য বাঙালি রক্ত দিয়েছে, সে ভাষা সৈনিকদের কথা ভেবে এখানে মাথা নুয়ে আসে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সাংস্কৃতিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দু এই শহীদ মিনার। এ বেদিতেই আমরা আয়োজন করি গানের আড্ডা কিংবা কবিতার আসর। আমরা মনে করি, শহীদ মিনারের নির্মাণশৈলি ভাষা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মদানের প্রতীক হয়ে থাকবে।’
সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্থপতি রাজন দাস এটির নকশা করেছেন। তার সঙ্গে কাজ করেছেন তানউইর বোরহান ও অমিতাভ দেবনাথ। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা।