
ফাইল ছবি
অসহযোগিতা ও ‘দুর্নীতির’ অভিযোগ এনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদ থেকে বিদায় নিতে চাওয়া ড. সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন পত্রটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিলেও এখনও তা গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে, ঘটনার দ্বিতীয় দিনেও বিষয়টির মীমাংসা হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু সংস্কৃতি উপদেষ্টাও নিজের অবস্থান ফেসবুকে জানিয়েছেন, সেহেতু জামিল আহমেদের পদত্যাগপত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত সরকারের। আমরা অপেক্ষা করছি।
এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ‘মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্যোৎসব’র সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে ছিলেন ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। আরও ছিলেন একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনসহ অনেকে। সভাপতির বক্তব্য দিতে এসে একাডেমির মহাপরিচালক প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সময় লিখে আনা পদত্যাগপত্রটি তার পাশে বসে থাকা সচিবের হাতে তুলে দেন। এরপর জানান তার এই অপারগতার কারণ। অনুষ্ঠানস্থলে তিনি অন্য অনেক নাট্যকর্মীর সামনে স্পষ্টতই বলেন, উপদেষ্টা তার কাছ থেকে কোনও একটি প্রকল্পের জন্য টাকা চান, কোনও ডকুমেন্ট ছাড়া সেই টাকা দিতে তিনি রাজী হননি এবং তাকে এজন্য কটূ কথা শুনতে হয়েছে
ঘটনার পরপরই ফেসবুকে আলোচনা- সমালোচনার মুখেই সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার অবস্থান জানিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ভালো শিল্পী হওয়া আর আমলাতন্ত্রকে কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো দুইটা দুইরকম আর্ট। দ্বিতীয় কাজটা করবার জন্য লাগে ধৈর্য এবং ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি। কলিগদের বুলিং না করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দিয়ে অনেক কাজ আদায় করে নেওয়া যায়। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে যে কম্পোজার লাগে, সেটার সাথে কোনও একটা থিয়েটার দলে নির্দেশনা দেওয়ার টেম্পারামেন্ট এক না। আমার ফিল্ম ইউনিটে আমি যা করতে পারি, একটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমি তা করতে পারি না।’
শুক্রবারের ঘটনার পর প্রথম কার্যদিবস ২ মার্চ শিল্পকলা একাডেমির ডিজি সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিতে যান সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি একাডেমিতে এসেছি মাত্র দেড়মাস হয়েছে। এই ঘটনাটা একটা ভুল বুঝাবুঝির কারণে হয়েছে বলেই মনে হয়। স্যারের সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না।’ পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিয়েছেন, কিন্তু গ্রহণের বিষয়ে এখনও কিছু জানেন না বলে তিনি জানান।
এদিকে শিল্পকলা একাডেমির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, স্যারের ফিরে আসার সম্ভাবনা কম। তিনি আমলাতান্ত্রিক বিষয়গুলো অতটা খেয়াল রাখেন না। ফলে নাটকের দল ও ক্লাসরুমের আচরণ থেকে বের হয়ে আসতে না পারার কারণে বেশকিছু অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিলো। তাদের উভয়ের মধ্যে ইগো সমস্যার বিষয়টিও লক্ষণীয়।