ছবি: সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার নদীর পানি ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা-ফসলি জমি-গাছপালা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে ভাঙনকবলিতরা।ভাঙন কবলিতদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে পাউবো যেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, তেমনি ভাঙনের শিকার মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করলেও কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। ভাঙনের শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের।
অন্যদিকে, পানি বাড়ায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অনেক বসতভিটায় পানি উঠেছে। ঘাস ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।জানা যায়, গত পাঁচদিন যাবৎ যমুনা নদীর পানি পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনার অরক্ষিত তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ইউনিয়ন, এনায়েতপুরের ব্রাহ্মগ্রাম, চৌহালীর খাসপুকুরিয়া ইউপির ভুতের মোড়, বাঘুটিয়া, ওমারপুর, বেলকুচি এবং কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর চরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কে নদীর তীরবর্তী মানুষ নির্ঘুম রাত পার করছে। এ ছাড়াও গত দুই মাসে অনন্ত ৪ সহস্রাধিক বসতভিটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
পাঁচিল গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম জানান, বসতভিটাসহ আসবাবপত্র সব কিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। ঝড় বৃষ্টি ও রোদে পুড়ে খেয়ে না খেয়ে আমাদের জীবন পার করছি। এতো কষ্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি।চৌহালীর বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম জানান, ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এক ইঞ্চি জায়গাও নেই। এখন একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় পড়ে গেছি। সরকার বা জনপ্রতি ও প্রশাসন কেউ আমাদের একটু সহযোগিতা করছে না।
চৌহালীর সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান জানান, দুই মাসের ব্যবধানে পুরো একটি গ্রাম, হাট বাজার, দোকানঘর সবকিছু বিলীন হয়ে গেছে। মানুষ একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। মাতৃভূমি ছেড়ে অনেকেই অন্য জেলায় বসতি গড়ে তুলছে।সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনা পানি বাড়ায় ভাঙনও কিছুটা বাড়ছে। যেখানে বেশি ভাঙছে, সেখানে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।