ফাইল ছবি
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ১ নং আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ছোড়া গুলিতে এক ব্যক্তি হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি উপজেলার সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মাবুদ বক্সের ছেলে মোহাম্মদ আলী কাচুয়া (৬৫)। তিনি নির্বাচনে বিজয়ী টিউবওয়েল প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী জোবায়দুর রহমানের চাচা।
জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, আজিমপুর ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গণনা শেষ হয়। এ সময় ইউপি সদস্য প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও জোবায়দুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ উত্তেজনা থামাতে চেষ্টা করেন। পরবর্তীকালে উত্তেজিত জনতা ভোটকেন্দ্রে ও পুলিশের ওপরে চড়াও হন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পুলিশ এ সময় প্রথমে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশের ছোড়া গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হন। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মোহাম্মদ আলী।
স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জিল্লুর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে পিঠের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছিল। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তাদের ফলাফলে সন্তুষ্টও হয়েছেন। কিন্তু দুই সদস্য প্রার্থী ফলাফল মেনে না নেওয়ায় সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে উত্তেজিত সমর্থকেরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এ সময় কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে ফিরে আশ্রয় নিলে সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রেও হামলা চালান। পুলিশ তখন আত্মরক্ষার্থে ৬০ থেকে ৭০টি গুলি ছোড়ে। এ সময় ওই বৃদ্ধের শরীরে গুলি লাগে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। পুলিশের কয়েক সদস্যও আহত হয়েছেন।
বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ, বিরল ও আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ছিল রোববার। সকাল ৮টায় ব্যালটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কোনো প্রকার সহিংসতার ঘটনা ছাড়াই বিকাল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। চেয়ারম্যান পদে আজিমপুরে লিটন আলী, ফরক্কাবাদে হুসেন আলী ও বিরলে মারুফ হাসান নির্বাচিত হন।