
ছবি- সংগৃহীত
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নির্মাণাধীন অসমাপ্ত ভাঙ্গাচোড়া রাস্তা ও ড্রেনে পড়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন। এবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হয়েছেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আমাদের সময়ের স্টাফ রিপোর্টার মোঃ নজরুল ইসলাম।
সোমবার রাতে এশার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাবার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে তার বাপ পায়ের হাঁটুর নীচে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রক্তক্ষরণ হয় এবং হাড়ে প্রচন্ড ব্যাথা পান। এসময় সঙ্গে থাকা তার এন্ড্রয়েড মোবাইলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দুর্ঘটনায় ড্রেনে পড়ে গেলে স্থানীয় মুসল্লিরা সাংবাদিক নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগ নেন এবং সেখানে চিকিৎসা দেয়া হয়। যেভাবে তিনি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিলেন তাতে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে আল্লাহ পাক তাকে রক্ষা করেছেন। চিকিৎসা শেষে রাতে তিনি বাসায় ফেরেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের ভাটিকাশর প্রাইমারি স্কুল রোডটির এক পাশে স্লাব সহ ড্রেন নির্মাণ হলেও রাস্তা পাকাকরণ হয়নি। ভাঙ্গাচোড়া রাস্তায় পড়ে গিয়ে প্রতিদিন মানুষ অহরহ আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। এ রাস্তাটির নির্মাণের অবশিষ্ট পাকাকরণ কাজটি সম্পন্ন করা হলে এলাকাবাসী দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেত।
এদিকে ভাটিকাশর প্রাইমারি স্কুল রোডে বলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হোলি ফ্যামিলি স্কুল এবং ময়মনসিংহ ডিএস কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী সহ সর্বস্তরের শত শত মানুষ এ রাস্তাটি দিয়ে ২৪ ঘন্টা যাতায়াত করে থাকে।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের ভাটিকাশর প্রাইমারি স্কুল রোডের রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প সমাপ্ত না করেই ঠিকাদাররা কাজ ফেলে চলে গেছে। ফলে জনদুর্ভোগ বেড়েছে চরমভাবে। নাগরিকরা সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল শাখায় বারবার যোগাযোগ করলেও কোন ফল পাচ্ছে না। উপায়ান্তর না দেখে এলাকার ভুক্তভোগী নাগরিকরা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করে। বিগত ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ভাটিকাশরে বসবাসরত শতাধিক বিশিষ্ট নাগরিক সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে রাস্তার দুরবস্থার কিছু ছবি ও ভিডিও প্রদর্শন করেন। এরপর রাস্তায় কিছু বিটবালু ফেলা হলেও অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করা হয়নি। রাস্তাটি দ্রুত নির্মিত হলে ইতিপূর্বে ভাঙ্গা রাস্তায় পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনায় কবলিত হয়ে যারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তারাসহ এলাকার ভুক্তভোগী মানুষ দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতেন।
বলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকছুদা আক্তার জানান, এই স্কুলে রাস্তা ভাঙ্গার কারণে শিশুরা প্রায় প্রতিদিনই নানা রকম দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত হচ্ছে। চার শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে বর্তমানে উপস্থিতি অর্ধেকে নেমে এসেছে।
ভাটিকাশরের বিশিষ্ট নাগরিক জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, রাস্তার সমস্যার জন্য নিয়মিত মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে যাবার পথে পড়ে গিয়ে অনেকই আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এছাড়াও এলাকার সকল মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এলাকার সমাজকর্মী মোঃ আরিফ উদ্দিন রানা জানান, রাস্তাটি নির্মাণের জন্য সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীদের নানা অনুরোধ সত্বেও এখনো আমরা দুর্ভোগের মধ্যেই রয়ে গেছি। অবিলম্বে রাস্তাটি নির্মাণের জন্য সংস্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।