ফাইল ছবি
৪৩তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণদের তালিকা ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তিনি আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন। তাকে সহযোগিতা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বায়েজীদ হোসাইন, আইনজীবী নাঈম সরদার ও ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার
রুলে ইতোপূর্বে ৪৩তম বিসিএস থেকে ৬৪২ জনকে নন-ক্যাডারের বিভিন্ন পদে নিয়োগের সুপারিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৪৪তম বিসিএসের ফল প্রকাশ না করা পর্যন্ত যত নন-ক্যাডার শূন্যপদ হবে তার তালিকা করে ৪৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার প্রার্থীদের থেকে নিয়োগের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
গত ২৯ জানুয়ারি ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও ক্যাডারপদে সুপারিশ পায়নি এমন ৫০০ জন চাকরি প্রার্থী এই রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটে পিএসসি চেয়ারম্যান, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল ও আদেশ জারি করেছেন
৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মো. মারুফ হোসেন, মো. হাসান সরদার, মো. ফারুকুল ইসলামসহ ৫০০ জন বাদী হয়ে রিট মামলা দায়ের করেছিলেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পরে ওই বিসিএসে সর্বমোট ৯ হাজার ৮৪১ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পিএসসি গত ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ নন-ক্যাডার পদে চাকরি করতে ইচ্ছুক এমন প্রার্থীদের অনলাইনে পছন্দ ক্রম আহ্বান করে
পরবর্তীতে গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিস পদে ২ হাজার ১৬৩ জনকে এবং একইসঙ্গে ৬৪২ জনকে বিভিন্ন নন ক্যাডার পদে সুপারিশ করা হয়। অথচ নন-ক্যাডার মেধাতালিকা প্রকাশ করাই হয়নি। যেটি ‘নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০১০, সংশোধিত ‘বিধিমালা ২০১৪’ এর পরিপন্থী
৪৩তম বিসিএস সার্কুলারে বলা হয়েছিল, সংশ্লিষ্ট বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে বঞ্চিত নন-ক্যাডার প্রার্থীদের নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০১০, সংশোধিত ‘বিধিমালা ২০১৪’ অনুযায়ী সুপারিশ করা হবে। উক্ত বিধি অনুযায়ী পিএসসি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে আসা পদগুলোকে সংরক্ষণ করবেন এবং পরবর্তী বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিসিএসের নন ক্যাডার প্রার্থীদের ধাপে ধাপে সুপারিশ করবে
কিন্তু পিএসসি নন-ক্যাডারদের মেধা তালিকা প্রকাশ না করেই সম্পূর্ণ অন্যায় এবং বিধি বহির্ভূতভাবে ৬৪২ জনকে বিভিন্ন নন করার পদে সুপারিশ করেছে, যা আইনের দৃষ্টিতে অন্যায় যা বাতিল করা আবশ্যক।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, ‘নন-ক্যাডার প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ না করা এবং ফলাফল প্রকাশের আগেই নন-ক্যাডার প্রার্থীদের পছন্দ ক্রম আহ্বান করা সংশ্লিষ্ট নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে মেধাবী হাজারো উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের বিষয়টি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা পিএসসির সাংবিধানিক দায়িত্ব। ইতোমধ্যে অনেক চাকরি প্রার্থীর বয়সসীমা অতিক্রম হওয়ায় তারা অন্য কোনো সরকারি চাকরিতে আবেদনও করতে পারবেন না। ফলে তারা চরম হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন। আশাকরি বিবাদীরা যথাসময়ে রুলের জবাব দেবেন।
এরআগে, গত ২৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত ৪৩তম বিসিএস এর নন-ক্যাডারের ফলাফল বাতিল, ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের মেধা তালিকা প্রকাশ এবং ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত শূন্য হওয়া নন-ক্যাডার পদে ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডারদের সুপারিশ অব্যাহত রাখার জন্য গত ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে রেজিস্টার্ড ডাকযোগে নোটিশটি পাঠানো হয়েছিল। নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।