![ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন: টার্গেট চাঁদাবাজি ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন: টার্গেট চাঁদাবাজি](https://www.bahumatrik.com/media/imgAll/2018September/Image-2502101317.jpg)
ফাইল ছবি
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নামে-বেনামের সংগঠন ও অধিকার আন্দোলন দিয়ে চলছে সভা-সেমিনার আর মানববন্ধন। খালি চোখে এসবের পেছনের উদ্দেশ্য পরিস্কার ভাবে বুঝা না গেলেও, মূলত ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করেই এসব আন্দোলন বা সভা সেমিনার হচ্ছে। তাদের টার্গেটে পড়ে কেউ হচ্ছেন সর্বশান্ত আবার কোন কোন ব্যবসায়ী বা কোম্পানির সুনাম প্রশ্নের মুখে ফেলে আদায় হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। ‘অধিকার আদায়ের’ নামে বিভিন্ন ব্যানার ব্যবহার হচ্ছে হরদম। এ ধরণের ডজন খানেক প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
ক্ষতিগ্রস্থ ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’, এমনই এক ভুঁইফোড় সংগঠন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই সংগঠনের ব্যানারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি চিঠি বিলি করা হয়। চিঠিতে বলা হয় ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হবে। তবে মজার বিষয় চিঠির তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ থাকলেও, গণমাধ্যমগুলোতে পাঠানো হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রেরকের ঠিকানা না থাকলেও, বাইপাল আশুলিয়া সাভারের ঠিকানায় নাম রয়েছে এই নামসর্বস্ব সংগঠনের।
পরে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন প্রেরকের সঙ্গে। তিনি জানান, তাকে ওপর থেকে যেভাবে বলা হয়েছে তিনি সেটিই করেছেন। প্রশ্ন করা হয়, আপনি চিঠির তারিখ উল্লেখ করেছেন ১০ ফেব্রæয়ারি, তাহলে ৮ ফেব্রুয়ারি অগ্রিম তারিখ দিয়ে কিভাবে স্বাক্ষর করলেন? জবাবে জাহাঙ্গীর আলম রাজীব নামের এই চিঠি প্রেরক বলেন, তাকে যেভাবে বলা হয়েছে তিনি সেটিই করেছেন, আর কিছু জানেন না। যে সংগঠনের ব্যানারে চিঠি পাঠিয়েছেন, সেটির নিবন্ধন আছে? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন না নেই, তবে তাকে এই চিঠি পাঠানোর জন্য ঢাকা থেকে জনৈক এক ব্যক্তি পরামর্শ দিয়েছেন তাই তিনি স্বাক্ষর করে সেটি পাঠিয়েছেন।
শুধু একটি বা দু’টি নয়, জানা গেছে, এমন ডজন খানেক সংগঠনের খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দারা। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজির স্বার্থে এসব সংগঠনের নাম ব্যবহার করে থাকে।
জাহাঙ্গীর আলম রাজীব এর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি গত এক দশক ধরে সাভারের বাইপালে স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বেক্সিমকো গ্রুপে কাজ করতেন। মূলত বেক্সিমকো গ্রুপের অর্থায়নে গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছেন যুবলীগের এই কর্মী।
বাইপালের আরেক আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল চৌধুরী। ৫ আগষ্টের পর তিনি এখন অধিকার আন্দোলন নেতা বনে গেছেন। তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে লোক জড়ো করে চাঁদাবাজির।
এদিকে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, টঙ্গী, শ্রীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের নামে শিল্পকারখানায় অস্থিরতার নেপথ্যেও এ ধরণের ভুঁইফোড় সংগঠনগুলো জড়িত বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।