
ফাইল ছবি
বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী তিন মাস তিনি ছুটিতে থাকবেন। সোমবার (৭ এপ্রিল) থেকে তার ছুটি কার্যকর হবে।
রোববার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৩৫৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ওমর ফারুক খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একটি সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপ, নাবিল গ্রুপকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সুবিধা দেয়া ও বিভিন্ন ঋণসংক্রান্ত অনিয়মে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক ব্যাংকার ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে চেয়ারম্যান করে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ সাল থেকে ব্যাংকটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এস আলমের মালিকানাধীন গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। নতুন পর্ষদ গঠনের পর ব্যাংকের অনিয়ম খুঁজতে চারটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়।
পরিচালনা পর্ষদের সূত্রটি জানায়, এসব নিরীক্ষায় এস আলম সংশ্লিষ্ট প্রায় এক লাখ কোটি টাকার ঋণে অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। এতে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এমডিকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬- ধারা অনুযায়ী তাকে যেন অপসারণ করে, এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে তার অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে ইসলামী ব্যাংক চিঠি দেবে বলেও জানায় সূত্রটি।
ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন এমডি হিসেবে নিয়োগ পান মনিরুল মওলা। তার সময় এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে ব্যাংকটি দুর্বল করে ফেলেছে। অভিযোগ রয়েছে, এস আলমকে অনৈতিকভাবে এসব ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন মনিরুল মাওলা।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও এমডি মনিরুল মওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংক থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।