ছবি : বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার : ভাষা চর্চা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষার বিপন্নতারোধ, চর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে ভাষা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিনব্যাপী উৎসবের শুরুতে বর্ণিল র্যালী, আলোচনা, ১০টি ভাষার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নৃত্য, গান, বাঙালি জনগোষ্ঠীর লোকজ পরিবেশনা ও নানা ভাষার মানুষের মেলবন্ধন ঘটে।
উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ এর আয়োজনে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১০টায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কমলগঞ্জ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাবেক চিফ হুইপ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উপজেলার দশটি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির অংশগ্রহণে র্যালী উপজেলা চৌমুহনা প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। পরে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক এর সভাপতিত্বে ও প্রভাষক শাহজাহান মানিক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগতিক বক্তব্য অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক আহমদ সিরাজ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সমুহের জীবন যাত্রা ও ভাষার চর্চার বিষয়টি তোলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুর রহমান, চট্রগ্রাম ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিয়া, ম. মুর্শেদুর রহমান, মো. হেলাল উদ্দীন।
নির্ধারিত আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন আন্তজার্তিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট এর উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার, লেখক ও ভাষাবিজ্ঞানী ড. সেলু বাসিত, কবি ও গবেষক প্রফেসর নৃপেন্দ্র লাল দাশ, লেখক ও গবেষক রসময় মোহান্ত, শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, ড. শোয়াইব জিবরান, ড. রণজিত সিংহ, কথাসাহিত্যিক আকমল হোসেন নিপু, প্রাবন্ধিক হামোম তনুবাবু।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, বহুমাত্রিক ভাষা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্য সমৃদ্ধ সীমান্তবর্তী এ উপজেলায় জনবৈচিত্র্যের সম্ভার ভাষা। তিন ভাগে বিভক্ত মণিপুরী সম্প্রদায় ছাড়াও খাসিয়া, সাওতাল, মুন্ডা, গারো, তেলেগু, উরাং, ওড়িষা, ত্রিপুরী, ভুজপুরী, ভুমিজসহ ১৩টি ভাষার জনগোষ্ঠী রয়েছে। এছাড়াও চা বাগানে আরও নানা ভাষাভাষীর লোক বসবাস করছে। তবে ভাষার চর্চা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সমুহের মাতৃভাষা রয়েছে হুমকির মুখে।
আলোচকরা বলেন, এ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাষার চর্চা ও প্রসার ঘটিয়ে নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চা ও প্রসারের লক্ষ্যে ভাষা উৎসবটির সূচনা হচ্ছে। এটিকে ধরে রেখে আগামীতে যাতে আরও বৃহদ পরিসরে ভাষা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় সে লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করতে হবে। বাঙালি জনগোষ্ঠীসহ ১০টি ভাষার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবেশনা ছাড়াও উৎসবে ‘কমলগঞ্জের ভাষা-বৈচিত্র্য সংকলন গ্রন্থ’ ও ‘ভাষা সংগ্রামী মোহাম্মদ ইলিয়াস এর জীবন ও কর্ম’ এ দু’টি গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করা হয়। ভাষা উৎসব উপলক্ষে তিনটি বইয়ের স্টলও বসে।
বহুমাত্রিক.কম