
ছবি- বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার : কঠোর নিরাপত্তা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে মধ্যদিয়ে সোমবার দুপুর ১টা থেকে রাখালনৃত্যের মধ্য দিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরী মহারাসলীলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিলেটের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিশ্বনন্দিত সাংস্কৃতিক ধারক মণিপুরী সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব “রাসলীলা” উপজেলার মাধবপুর জোড়ামন্ডপ প্রাঙ্গনে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী সম্প্রদায়ের ১৭৮ তম ও আদমপুরের মণিপুরী কালচারাল কমপ্লেক্স ও তেতইগাঁও সানাঠাকুর মন্ডপ প্রাঙ্গণে মনিপুরী মী-তৈ সম্প্রদায়ের মহারাসোৎসব শুরু হয়েছে।
আনন্দ-উৎসাহ, ঢাক, ঢোল, মৃদঙ্গ, করতাল এবং শঙ্খ ধ্বনির মধ্যদিয়ে রাধা-কৃষ্ণের লীলাকে ঘিরে সোমবারের দিনটি বছরের অন্য সব দিন থেকে ভিন্ন আমেজ নিয়ে আসে কমলগঞ্জ উপজেলাবাসীর জীবনে। বৈ মহামারী করোনার কারণে এ বছর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে করার কথা থাকলেও সোমবার সকাল থেকে রাসোৎসব দেখতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজারো মানুষের ঢল নামে। তবে মেলা এ বঝর হচ্ছে না।
মাধবপুরের জোড়ামন্ডপ ও আদমপুর মন্ডপে সোমবার দুপুর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনু্ষ্িঠত হয়েছে রাখাল নৃত্য। রাখাল নৃত্যের বিভিন্ন ধাপে রাধাকৃষ্ণের শৈশব, কৈশোর ও যৌবনকালের বিভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। নিজস্ব পোশাকে সজ্জিত হয়ে মণিপুরী তরুণ-তরুণীরা এতে অংশ নেন।
এরপর রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মণিপুরী নৃত্যের ধ্রুপদ ভঙ্গিমায় রাধাকৃষ্ণের রাসনৃত্য চলবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শৈশব এবং শ্রীমতি রাধিকার সঙ্গে প্রেমের কাহিনী নিয়ে রাসোৎসবের আয়োজন। মাধবপুরের শিববাড়ি থেকে শুরু করে গ্রামের তিনটি মন্ডসহ পুরো এলাকা সেজেছে বর্ণিল সাজে।
মাধবপুর মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ জানান, মাধবপুর জোড়ামন্ডপে রাসোৎসব সিলেট বিভাগের মধ্যে ব্যতিক্রমী আয়োজন। এখানে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের আগমন ঘটে। বর্ণময় শিল্প সমৃদ্ধ বিশ্বনন্দিত মণিপুরী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবে সবার মহামিলন ঘটে। স্কুল শিক্ষিকা অঞ্জনা সিন্হা বলেন, বংশ পরম্পরায় নান্দনিকতার পূজারী মণিপুরীদের মেলবন্ধন এই রাস উৎসব। এটি এখন জাতিধর্ম নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে।
মণিপুরী ললিতকলা একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা প্রভাস সিংহ জানান, এখানে সব ধরনের সুবিধা বিদ্যমান থাকায় এটি উৎসবে রূপ নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসবে যোগ দিতে হাজার হাজার ভক্ত অনুরাগী এখানে এসেছেন।
বহুমাত্রিক.কম