
ফাইল ছবি
ভারতের কলকাতায় ক্রমশই বাড়ছে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। ভাইরাসের প্রভাবে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে অভিভাবকদের। আপাত-নিরীহ অ্যাডিনোভাইরাস আচমকা কেন এতটা মারাত্মক হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে চিকিৎসকেরাও।
বছর দুয়েক পরে ফিরে আসা অ্যাডিনোভাইরাসের মিউটেশনের মাধ্যমে জিনগত কোনো পরিবর্তন ঘটেছে কি না, ইতোমধ্যেই তা জানার চেষ্টা শুরু করেছে নাইসেড।
জানা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে বছরব্যাপী নাইসেডে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের (রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন) ওপরে নজরদারি চালানো হয়। সেটি মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জা ও প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ওপরে নজরদারির জন্য হলেও, রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট প্যানেলে আরও কতগুলো ভাইরাস আছে, যা পরীক্ষা করা হয়।
নাইসেডের সেই রিপোর্টেই উঠে এসেছে উদ্বেগের ছবি। জানা যাচ্ছে, ডিসেম্বরে অ্যাডিনোভাইরাস ছিল ২২ শতাংশের মতো। জানুয়ারিতে ছিল ৩০ শতাংশ এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) পর্যন্ত পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অ্যাডিনোভাইরাস রয়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। কর্মকর্তা শান্তা দত্ত বলেন, এ রাজ্যে আচমকা অ্যাডিনোভাইরাসের এত প্রকোপ কেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ফোন আসছে। বিষয়টি জানতে অ্যাডিনোভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, হাসপাতালে ক্রমশই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিকু) রোগীর সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। পিকু-তে এক থেকে দু’বছরের শিশুর সংখ্যাই সব থেকে বেশি।
এক শিশুরোগ চিকিৎসক জানান, ‘দু’ বছরের কমবয়সি বাচ্চাদের অতি দ্রুত রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হচ্ছে। অনেকের শারীরিক অবস্থা এত দ্রুত খারাপ হচ্ছে যে, ভেন্টিলেশন কিংবা অন্যান্য কৃত্রিম উপায়ে রোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে। শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক শান্তনু রায়ের মতে, মিউটেশনের কারণেই অ্যাডিনোভাইরাস এত বেশি সংক্রামক ও ভয়ানক বলে মনে হচ্ছে। আগে এই ভাইরাসে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা বেশি পাওয়া যেত না। এ বার সেটি মারাত্মক বেশি। মেনিনজাইটিসও হচ্ছে।