বহুদিন ধরে একদল নেতাজি বিশেষজ্ঞ দাবি করে আসছেন ভারতের অঙ্গরাজ্য উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদের গুমনামি বাবা বা ভগবানজি আর কেউ নন তিনি ছিলেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
একসময় তাঁদের এই দাবি নিয়ে সারা ভারতে যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল তা এখনও বর্তমান। একটি বড় অংশের জোরালো দাবি, তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি। তিনি ফিরে এসেছিলেন ভারতেই। গুমনামি বাবা বা ভগবানজিই নেতাজি কি না সেটা জানতে নেতাজি রহস্য উন্মোচনে গঠিত জাস্টিস মনোজ মুখার্জি কমিশন গুমনামি বাবার DNA পরীক্ষাও করায়। ফরেনসিক ল্যাবরেটরি থেকে দেড় পাতার একটি রিপোর্টে ‘দায়সারা’ভাবে নেতাজির সঙ্গে ভগবানজির মিল নেই বলে জানানো হয়েছিল। পরে বিচারপতি মনোজ কুমার মুখার্জি স্পষ্ট করেন, তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি।
সেই রহস্য উদঘাটনে সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ ‘মিশন নেতাজি’র সক্রিয় সদস্য সায়ক সেন গুমনামি বাবার ডিএনএ-র ইলেকট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্ট জানতে দেশটির তথ্য জানার অধিকার আইনে আরটিআই করেন। ভারতের ডিরেক্টরেট অফ ফরেনসিক সায়েন্সেস সার্ভিসেসের কলকাতা শাখার পক্ষে তিনদিন আগে অর্থাৎ ১৮ অক্টোবর জানানো হয় যে গুমনামি বাবার ডিএনএ টেস্টের ইলেকট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্ট ল্যাবরেটরিতেই রয়েছে।
এর সঙ্গে তারা জানিয়েছে, গুমনামি বাবার ডিএনএ-র ইলেকট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশে তারা অক্ষম। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, এই ইলেকট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্ট জনসমক্ষে আনলে বিঘ্নিত হতে পারে দেশের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বদলে যেতে পারে রাজনীতির রসায়ন। সম্পর্ক খারাপ হবে বহু দেশের সঙ্গে! এতে করে দেশটিতে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য আবারও গভীর আকার ধারণ করল ও নতুন মাত্রা পেল।
উল্লেখ্য, ইলেকট্রোফেরোগ্রাম হল অনেকটা এক্স রে প্লেটের মতো। সেটি থাকলে যে কোনও ডিএনএ বিশেষজ্ঞ ‘সিকোয়েন্স’ ম্যাচ করিয়ে দু’টির মধ্যে মিল খুঁজতে পারেন। নেতাজির বাবা ও মায়ের পরিবারের অনেকেরই যেহেতু এই ইলেকট্রোফেরোগ্রাম রয়েছে, তাই ভগবানজির সঙ্গে ‘ম্যাচ’ অর্থাৎ সজ্জার বিন্যাস একত্রিত করা অসম্ভব ছিল না। ভারতের বহু ডিএনএ বিশেষজ্ঞ অতীতে এই কাজ করতে রাজি ছিলেন এবং এখনও আগ্রহী রয়েছেন।