আজ শহীদ আসাদ দিবস। শহীদ আসাদের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার। ১৯৬৯ সালের এই দিনে পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের ১১ দফা কর্মসূচির মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে জীবন দেন ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান আসাদ। সেই থেকে দিনটি ‘শহীদ আসাদ দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এবং আহত হন আরো অনেক। শহিদ আসাদের এই আত্মত্যাগ চলমান আন্দোলনে যোগ করে নতুন মাত্রা। বাঙালির স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জেল-জুলুম উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে। আসাদ শহীদ হওয়ার পর তিন দিনের শোক পালন শেষে ওই বছরের ২৪শে জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ছয় দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার নামে ঢাকাসহ সারা বাংলার রাজপথে। সংঘটিত হয় উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান। পতন ঘটে আইয়ুব খানের। আরেক স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় বসে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। সত্তর সালের সেই অভূতপূর্ব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু ইয়াহিয়া ক্ষমতা না ছাড়াতে নানা টালবাহানা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় একাত্তর সালে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শহীদ আসাদের আত্মত্যাগ দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শহীদ আসাদের আত্মত্যাগ সবসময় আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে প্রেরণা জোগাবে।
শহীদ আসাদ ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদীর ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটসংলগ্ন শহীদ আসাদ স্মৃতিসৌধে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করবে। এ ছাড়া নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামের শহীদ আসাদের মাজার জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
এদিকে, আসাদ দিবসকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ করবে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। ‘শহীদ আসাদ ও ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান করবে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।