ছবি- বহুমাত্রিক.কম
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।
অখণ্ড ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পুরোধা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৬তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) ‘দেশপ্রেমের অমলিন চেতনায় নেতাজী ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা কথা বলেন। বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনায় ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে পরাধীন ভারতবর্ষকে মুক্ত করার সংগ্রাম করেছিলেন। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের আপামর জনসাধারণকে মুক্তি সংগ্রামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন। মহান এ দুই নেতার সংগ্রামের অজানা নানা অধ্যায় তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এ ধরনের আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের পক্ষে ‘বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ঐতিহ্যিক পরম্পরায় দুই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রভাব’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন নেতাজী বিশেষজ্ঞ ড. জয়ন্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নেতাজী-নজরুল-রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু অখণ্ড বাঙালির গৌরব। সমকালীন জাতপাতের সংকট দূও করতে হলে এই চিরস্মরণীয় বাঙালিদের আদর্শেও যুগপৎ চর্চা অত্যন্ত জরুরি। আর এধ রনের চর্চার মধ্যদিয়েই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক পদ্মা নদীতে নির্মিত সেতুর মতোই সুদৃঢ় হবে বলে আমার বিশ্বাস।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের পরিচালক ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, ‘নেতাজীর সংগ্রামী জীবন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছিল। বঙ্গবন্ধু প্রথমে অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু বর্বর পাকিস্তানী জান্তাদের মোকাবেলায় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে অহিংস আন্দোলনে স্বাধীনতা আসবে না। তাই তিনি নেতাজীর মতো সশস্ত্র সংগ্রামের পথকেই বেছে নিয়েছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধুর মাঝে নেতাজীর ও গান্ধীজী-এই দুইয়ের সংমিশ্রণই ছিল।’
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৬তম জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব এবং পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান আহ্বায়কের বক্তব্য রাখেন পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সভাপতি তাপস হোড়। অনুষ্ঠানে ‘তরুণদের চোখে নেতাজী ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন। সবশেষে অনুষ্ঠানে বরেণ্য রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং তার দল সুরের ধারার শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। আয়োজন সহযোগী ছিল ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নেতাজী সুভাষ আইডিওলজি (আইসিএনএসআই) ও নিউজপোর্টাল বহুমাত্রিক.কম।