-নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। ছবি: বোধিসত্ত্ব তরফদার
ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ রাজশক্তির মুলোৎপাটনে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন আজাদ হিন্দ ফৌজ রাজকীয় জাপানি সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় বার্মা ফ্রন্টে (মিয়ানমার) ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে ভারতের মূল ভূখণ্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চল মণিপুরে মধ্য দিয়ে বীরোচিত অভিযান চালিয়ে যে ইতিহাস রচনা করে তা ওই অঞ্চলসহ গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পুনর্জাগরণে সুদূর প্রসারী ভূমিকা রাখে। কলকাতার ইতিহাস গবেষক ও নেতাজী অনুরাগী বোধিসত্ত্ব তরফদার এ সংক্রান্ত এক গবেষণায় এই মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নেতাজী সুভাষ আইডিওলজি (আইসিএনএসআই), ঢাকা প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রটি অবিকল প্রকাশ করেছে বহুমাত্রিক.কম।
পুরো গবেষণাপত্রটি পড়ুন: A study on INA’s War of Independence and its socio-political impact in the Northeast and in rest of India
গবেষণাপত্রে বোধিসত্ত্ব তরফদার গবেষণার সারসংক্ষেপে উল্লেখ করেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব শুধু জাপানের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদেরই নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারতীয়দেরও মুগ্ধ করেছিল, যা তাদের ভেতরের অমিত শক্তিকে জাগিয়ে তুলে; পুনর্জাগরিত করে। পরাধীন মাতৃভূমি ভারতকে মুক্ত করার জন্য নেতাজীর আজাদ হিন্দের যুদ্ধ প্রচেষ্টা ভারতের অভ্যন্তরেও ব্যাপক জাগরণ ঘটায়, বিশেষ করে ব্রিটিশের ভারতীয় সামরিক ছাউনীগুলোতে। প্রাণপণ যুদ্ধে আজাদ হিন্দের অর্ধেকরও বেশি সেনা প্রাণ দিয়ে মুক্তিসংগ্রামের পথকে প্রশস্ত করেন। শুধু পুরুষরাই নন, ভারতীয় মহিলারাও এগিয়ে এসে ভারতকে স্বাধীন করার জন্য ঔপনিবেশিক ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নেতাজী গঠিত ঝাঁসির রানী রেজিমেন্টের সদস্যরা অকাতর আত্মাহুতি দেন।
বোধিসত্ত্ব তরফদার তাঁর নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধে অন্বেষণের চেষ্টা করেছেন, কিভাবে নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রভাবে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের স্থানীয় অধিবাসীরা মুক্তির সংগ্রামে যুক্ত হন। পরবর্তী দশকগুলো এই সংগ্রামের প্রভাব কিভাবে ওই অঞ্চলের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলকেও প্রভাবিত করে-তাও তুলে আনার চেষ্টা করেছেন তিনি।
এই গবেষণা কর্মটি সম্পন্ন করতে বোধিসত্ত্ব তরফদার নেতাজী ও আজাদ হিন্দ বিষয়ক তুলনামূলক অধ্যয়ন ছাড়াও খ্যাতিমান নেতাজী ও ইতিহাস গবেষক এবং মণিপুর অঞ্চলের অনেক স্থানীয় অধিবাসীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। নেতাজীর ১২৭তম জন্ম বার্ষিকীর প্রাক্কালে নেতাজীর ও আজাদ হিন্দের বীর যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ হিসেবে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে, জানান গবেষক বোধিসত্ত্ব তরফদার।