ছবি- সংগৃহীত
শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে বুধবার রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে অবরোধের ঘোষণা দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে ‘সাধারণ ধর্মঘট’।
মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাস, জলকামান দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ। এরপরেই সরাসরি শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় বিজেপি। ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের দমনপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টা আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার দুপুর সংবাদ সম্মেলনে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আগামী পরশু থেকে আমরা ধর্ণা শুরু করব। এ ছাড়াও ছাত্র সমাজকে সব রকম আইনি ও মেডিক্যাল সাহায্য দেওয়ার জন্য আজ থেকে পুনরায় হেল্পলাইন নম্বর চালু করছি আমরা। এখানে ফোন করে আপনারা যে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা কিংবা পরামর্শ চাইতে পারবেন। আসুন আগামী ৩০ আগস্ট আমাদের মহিলা মোর্চার ডাকে সব নারী, সব মানুষ পথে নামুন। এই আন্দোলন বিজেপির নয়, এটা সমাজের আন্দোলন।
মঙ্গলবার দুপুরেও নবান্ন অভিযান নিয়ে মুখ খোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভার বাইরে
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, অনেক জায়গা থেকেই অত্যাচারের খবর আসছে। রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমনপীড়ন না চালানোর আবেদনও জানান তিনি। বুধবার রাজ্য স্তব্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন এই বিরোধী দলনেতা।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। রাজ্য পুলিশের কাছে খবর ছিল, এই নবান্ন অভিযানে সামনে মহিলা এবং ছাত্রদের রেখে পেছন থেকে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হতে পারে। এমনকি পুলিশকে প্ররোচিত করে বলপ্রয়োগে বাধ্য করা হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। এর পরেই শহর জুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি করে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই নবান্ন চত্বরে ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয় ঝালাই করা গার্ডরেল এবং কন্টেইনার। কিন্তু বেলা বাড়তেই একে একে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। সাঁতরাগাছি, হাওড়া সেতুতে ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। স্লোগান ওঠে, এক দফা, এক দাবি, মমতার পদত্যাগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে জলকামান চালানো শুরু করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।
নবান্ন অভিযানকে সমর্থন জানানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। সোমবার রাতে যখন নবান্ন অভিযানের আহ্বায়ক ছাত্র সমাজের চার নেতাকে গ্রেফতার করা হয় তখনও শুভেন্দু আশ্বাস দিয়েছিলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবেন তিনি। এ জন্য যা যা আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন এবং যত অর্থ খরচ হয় সব বহন করবে তার দল।