ছবি- সংগৃহীত
অশান্ত মণিপুরের পশ্চিম ইম্ফল ও পূর্ব ইম্ফলে কারফিউ জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে সাতটি জেলায় স্থগিত করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। জেলাগুলোতে ছয়জনকে হত্যার প্রতিবাদে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এই সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
নিহতদের অপহরণ করার পর জিরিবামে তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এই খবর জানিয়েছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির বিবেচনায় পশ্চিম ইম্ফল, পূর্ব ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, থৌবাল, কাকচিং, কাংপোকপি ও চুরাচাঁদপুর জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা দুই দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়। ইম্ফল উপত্যকার জেলার কিছু অংশে ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। ক্ষুব্ধ জনতা বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে।
একটি সূত্র শনিবার জানিয়েছে, ইম্ফলের খোয়াইরামবন্দ কিথেলে ছয়জনকে অপহরণ ও হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়। নিহতদের তিনজন নারী ও বাকি তিনজন শিশু। শুক্রবার সন্ধ্যায় মণিপুর-আসাম সীমান্তে জিরিবাম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের জিরিমুখের একটি নদীর কাছে তাদের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
মৃতদেহগুলো শুক্রবার রাতে আসামের শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (এসএমসিএইচ) আনা হয় এবং পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
সোমবার জিরিবাম জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের পর, একটি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তিন নারী ও তিনটি শিশু নিখোঁজ হয়। মেইতি সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, তাদের সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেছে৷
১১ নভেম্বর একদল সন্ত্রাসী বোরোবেকরা এলাকায় একটি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায়। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর তাদের আক্রমণটি ব্যর্থ করে দেয়। এর ফলে ১১ সন্ত্রাসী নিহত হয়। পিছু হটার সময় সন্ত্রাসীরা থানার কাছে একটি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তিন নারী ও তিন শিশুকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তাদের সন্ধানে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। শনিবার স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।
মণিপুরে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে কুকি ও মেতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সহিংসতার চলছে। সম্প্রতি এই সহিংসতার একাধিক ঘটনার জেরে আরও বেড়েছে। জুনে একটি জমিতে এক কৃষকের বিকৃত লাশ পাওয়া পর ফের সহিংসতার সম্মুখীন হয় জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় জিরিবাম।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় জিরিবামসহ মণিপুরের ছয়টি থানা এলাকায় সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ ক্ষমতা আইন (এএফএসপিএ) পুনর্বহাল করেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় 0জোর দিয়ে বলেছে, চলমান জাতিগত সহিংসতার কারণে ‘অস্থির পরিস্থিতির’ বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ৩ মে থেকে ইম্ফল উপত্যকার মেইতি ও পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের কুকি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ সময় গৃহহীন হয়ে পড়ে আরও হাজার হাজার মানুষ।