ফাইল ছবি
দু’দিনের সফরে আগামী সপ্তাহে ঢাকা আসছেন ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক বৃটিশ প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট এমপি। গত জুলাইতে বৃটিশ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এফসিও) অফিসে ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশে এটাই হবে তার প্রথম সফর।
ঢাকার দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র মানবজমিনকে সন্ধ্যায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানিয়েছে, গুড উইল ভিজিটে আসা বৃটিশ মন্ত্রী ক্যাথরিনের আলোচ্যসূচিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অগ্রাধিকার থাকবে। তবে গণতন্ত্র, রাজনীতি, অর্থনীতি, মৌলিক মানবাধিকারসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কোর ইস্যু এবং সম-সাময়িক বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে। সফরকালে তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমের সঙ্গেও তার মতবিনিময় হতে পারে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃটিশ প্রতিমন্ত্রীর সফরসূচির অনেক কিছু চূড়ান্ত হয়নি দাবি করেছে সেগুনবাগিচা। বৃটেনে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সফরটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পেশাদার কূটনীতিকরা। বিশেষ করে জুলাইতে তার দায়িত্ব গ্রহণ এবং ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ঢাকায় তার আগমনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এ নিয়ে এরইমধ্যে সেগুনবাগিচা এবং ঢাকাস্থ বৃটিশ হাইকমিশনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। জানা গেছে, ক্যাথরিন সরাসরি চীন, উত্তর-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে বৃটেনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি দেখভাল করেন। তাছাড়া ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিশেষত রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক কূটনীতি, প্রযুক্তির বিস্তার ও ব্যবহারের মতো বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত।
তার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এ অঞ্চলে বৃটেনের স্বার্থে আঘাত বা প্রতিবন্ধকতায় নিষেধাজ্ঞার মতো বিরক্তিকর ইস্যুতে লেবার পার্টি এবং সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ক্যাথরিনের রিপোর্ট তথা মূল্যায়নের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারে কেবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ক্যাথরিন এলিজাবেথ ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত বৃটিশ রাজনীতিবিদ যিনি ২০১৫ সাল থেকে পার্লামেন্টে রয়েছেন। তিনি লেবার পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা। আধুনিক ভাষা এবং সমাজকর্মের ওপর উচ্চতর পড়াশোনায় পারদর্শী ক্যাথরিন ওয়েস্ট ১৯৯৮ সাল থেকে লেবার পার্টিতে সক্রিয় রয়েছেন। গত
২০০২-১৪ তিনি টোলিংটন ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্বকারী আইলিংটন লন্ডন বরো কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। রাজনৈতিক উত্থান-পতনের কঠিন পথ ধরে হাঁটা ক্যাথরিন ওয়েস্টের দল লেবার পার্টি প্রধানের একটি বক্তব্য বৃটিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশিদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনকালে বাংলাদেশি অভিবাসীদের ‘কটাক্ষ’ করে লেবার পার্টি প্রধান কেয়ার স্টারমার ওই বক্তব্য দিয়েছিলেন। এর প্রতিবাদে দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক নারী কাউন্সিলর। গত ২৫শে জুনে বাংলাদেশ নিয়ে লেবার পার্টির নেতা বর্তমান বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের আপত্তিকর সেই মন্তব্যের বিষয়ে ঢাকার বৈঠকে কোনো আলোচনা হবে কিনা? তা স্পষ্ট নয়।