
ফাইল ছবি
ভারতের মুম্বাইয়ে ২৬/১১ এ হামলার হোতা তাহাউর রানাকে ফেরত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাকে উড়িয়ে আনে ভারত।রাতেই তাকে বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল ভারত ২৬/১১-র মূল চক্রী তাহাউর রানাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারবে। এরপর বৃহস্পতিবারই অ্যামেরিকা থেকে তাকে বিশেষ বিমানে ভারতে নিয়ে আসা হয়। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সির (এনআইএ) একটি দল রানাকে ভারতে নিয়ে আসে। দিল্লিতে নামানোর পর প্রথমে মনে করা হয়েছিল তাকে তিহার জেলে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তার বদলে তাকে সরাসরি বিশেষ আদালতে তোলা হয়। আদালত রানাকে ১৮ দিন এনআইএ হেফাজতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। শুক্রবার থেকে রানার লাগাতার জেরা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এনআইএ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ২৬/১১-র মূল চক্রী ছিল রানা। তার পরিকল্পনাতেই পুরো ঘটনাটি ঘটেছিল। রানার বিরুদ্ধে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যা, ষড়যন্ত্র, বেআইনি গতিবিধি প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে এনআইএ। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। দিল্লিতে এনআইএ-এর সদর দপ্তরেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। তবে তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কোথায় রাখা হবে, এবিষয়ে গোপনীয়তা অবলম্বন করছে তদন্তকারী সংস্থা।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মুম্বাই হামলার সূত্রপাত। একই সঙ্গে মুম্বইয়ের একাধিক জায়গায় হামলা শুরু করে সন্ত্রাসীরা। স্টেশনে, পাবে, তাজ হোটেলে এবং নরিম্যান হাউসে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে তারা। হাসপাতালে ঢুকেও গুলি চালায় জঙ্গিরা। সব মিলিয়ে ১৭৫ জনের মৃত্যু হয় ওই ঘটনায়। যার মধ্যে বহু বিদেশিও ছিলেন। ১০ জন জঙ্গি ওই হামলা চালিয়েছিল। বাকি সকলকে হত্যা করা হলেও আজমল কাসভকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জেরা করে গোটা পরিকল্পনার ছক জানতে পারে তদন্তকারীরা। জানা যায় ডেভিড কোলম্যান হেডলি এবং রানার কথা।
পরবর্তীকালে কাসভের ফাঁসি হয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, রানা হেডলিকে ভারতে পাঠিয়েছিলেন হামলার পরিকল্পনা করতে। তারা সকলেই লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে যুক্ত। হেডলির পরিকল্পনামাফিকই হামলা হয়।
কানাডার নাগরিক রানা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। তবে জন্মসূত্রে তিনি পাকিস্তানি। লস্করকে বিভিন্ন ভাবে তিনি সাহায্য করতেন। এই অপরাধেই যুক্তরাষ্ট্র তাকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু ভারত বারংবার তাকে চাইলেও প্রাথমিকভাবে তাকে দিতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আদালত সেই অনুমতি দিলো। তারপরেই রানাকে দ্রুত ভারতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। বৃহস্পতিবার রানার বিমান দিল্লি বিমানবন্দরে আসার পর ভারতের মাটিতে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়।