ফাইল ছবি
ব্যালট চুরির অভিযোগে ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২০২৫ কার্যকরী কমিটি গঠনের দুইদিন ব্যাপী নির্বাচনের দ্বিতীয় দিনের ভোট গ্রহণ বন্ধ হওয়ার প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর ফের শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার পর ফের ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
আজ সকাল ৯টা থেকে দ্বিতীয় দিনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বেলা ১২টার দিকে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের নীল প্যানেলের প্রার্থীরা ব্যালট চুরির অভিযোগ করেন। এরপর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনের নির্বাচন কমিশন।
এর আগে গতকাল বুধবার প্রথম দিন এ নির্বাচনে ৪ হাজার ২৩০ জন আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বৃহস্পতিবারও একইভাবে ভোট গ্রহণের পর গণনার শেষে ফলাফল ঘোষণা করার কথা ছিল।
এশিয়ার বৃহত্তম এ বার সমিতিতে ৩০ হাজার ১২১ জন আইনজীবী সদস্য রয়েছেন। যার মধ্যে এ নির্বাচনে ২১ হাজার ১৩৭ জন আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নিবাচনে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান বাদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন। তার অধীনে ১০ জন কমিশনার এবং ১৩৯জন সদস্য সূষ্ঠু নির্বাচন অন্ষ্ঠুানের জন্য কাজ করছেন।
এ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের নীল প্যানেল এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সাদা প্যানেল নির্বাচনে আংশ নিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের নির্বাচনের নীল ও সাদা দলের প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। কোনো প্রার্থীকে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই।
নির্বাচনে নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, গত দুইবারের পরাজিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. খোরশেদ মিয়া আলম ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী গত দুইবারের পরাজিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
নীল প্যানেলের অন্যান্য পদের প্রার্থীরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি পদে গত দুইবারের পরাজিত প্রার্থী মো. আব্দুর রাজ্জাক (জামায়াত), সহসভাপতি পদে গত দুইবারের পরাজিত প্রার্থী মো. সাহিদুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ পদে দুই দুইবারের পরাজিত প্রার্থী আব্দুর রশিদ মোল্লা, সিনিয়র সহসাধারণ সম্পাদক পদে গত দুইবারের পরাজিত প্রার্থী মো. জহিরুল হাসান মুকুল, সহসাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ মোহাম্মাদ নজরুল হোসেন (অপু), লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মোস. নারগিস পারভীন মুক্তি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে গত দুইবারের পরাজিত প্রার্থী নুরজাহান বেগম বিউটি, অফিস সম্পাদক পদে মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মোহাম্মাদ মোবারক হোসেন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে মাহবুব হাসান রানা ও তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম মারুফ।
নীল দলের সদস্য পদে আলী মোরতুজা, গাজী তানজিল আহমেদ, মো. আনোয়ার হোসেন চাদ, মো. আসিফ, জাবেদ হোসেন, খালিলুর রহমান, মো. সামসুজ্জামান দিপু, মোহাম্মাদ আলী বাবু,মুক্তা বেগম ও রেজাউল হক রিয়াজ।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের সভাপতি পদে দুইবারের পরাজিত প্রার্থী আব্দুর রহমান হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মো. আনোয়ার সাহাদাত শাওন।
সাদা প্যানেলের অন্যান্য পদের প্রার্থীরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি পদে আবুল কালাম মোহাম্মাদ আক্তার হোসেনু, সহসভাপতি পদে মো. আবু তৈয়ব, ট্রেজারার পদে মো. ওমর ফারুক, সিনিয়র সহসাধারণ সম্পাদক পদে মো. মাসরাত আলী তুহিন, সহসাধারণ সম্পাদক পদে আসাদুজ্জামান বাবু, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে হুমায়ুন কবির সবুজ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মনিরা বেগম মনি, অফিস সম্পাদক পদে সরোয়ার জাহান, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. ওয়াকিলুর রহমান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে প্রদীপ চন্দ্র সরকার ও তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে সৈয়দা ফরিদা ইয়াছমিন জেসি।
সদস্য পদে এমদাদুল হক এমদান, হাফিজ আল মামুন, কাজী হুমায়ুন কবির, মাহমুদুল হাসান, আব্দুর রহমান মিয়া, মো. ইমরান হাসান, মো. মোহসিন উদ্দিন, মোহাম্মাদ মইন উদ্দিন বিপ্লব, শাহিন আহমেদ রুপম ও সুমন আহমেদ।
উল্লেখ্য, ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০২৩-২০২৪ কার্যকরী কমিটি গঠনের নির্বাচনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেল ২৩টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে জয় লাভ করে। ওই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের নীল প্যানেল ফল প্রত্যাক্ষান করে কারচুপির অভিযোগ করে।
এর আগে ২০২২-২০২৩ কার্যকরী কমিটি গঠনের নির্বাচনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩টি পদের মধ্যে ১৭টি পদে জয় লাভ করে। অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের নীল প্যানেল দুইটি সম্পাদকীয় পদসহ ৬টি পদে জয়লাভ করেছে। এ নির্বাচনেও তারা কারচুপির অভিযোগ করে।