ছবি- বহুমাত্রিক.কম
চলতি মৌসুমের হাড়কাঁপানো শীত পড়তে শুরু করেছে। শীতের শুরুতেই চা বাগান ও বনাঞ্চল অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের জনজীবনে বিপর্যয় নেমে আসছে। চা শ্রমিক জনগোষ্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি, জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাটবাজারে ও ফুটপাতে গরম কাপড় কিনতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। কমে আসছে দিনমজুরদের আয় রোজগার। বুধবার শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা ছিল ১৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত দু’দিন ধরে রোদের তাপ কমে যাওয়ায় শীত বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার দিনভর সূর্যের আলো দেখা যায়নি। ফলে বনাঞ্চল ও চা বাগান এলাকা সমৃদ্ধ থাকার কারণে মৌলভীবাজার জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। তবে করোনাকালীন সময়ে ঠান্ডা বৃদ্ধি পাওয়ায় সচেতন মহলের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে কাজকর্মে স্তবিরতা দেখা দিয়েছে। দিন আনে দিন খায় এমন লোকদের আয় রোজগার কমে গেছে। ঠান্ডায় গরম কাপড়ের অভাব করছেন নিম্ন আয়ের লোকজন। শীতে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এ দিকে সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। সরকারি হাসপাতাল ও প্রাইভেট চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীর ভিড় বাড়ছে। শিশু ও বয়স্ক লোকদের মধ্যে এসব রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে। বুধবার ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় মৌলভীবাজার সদর ও শ্রীমঙ্গলসহ জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গরম কাপড়ের দোকান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে কাপড় কিনতে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী কাপড় কিনতে চাহিদামতো দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন নিম্ন ও নিম্মমধ্যবিত্ত পরিবার সদস্যরা।
কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা ও ইউপি সদস্য সীতারাম বীন, কুলাউড়া উপজেলার লংলা চা বাগানের শ্রমিক স্বপন নাইডু বলেন, ঠান্ডায় চা বাগানে শ্রমিক কলোনী সমুহে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। একদিকে পুষ্টিমানের খাবারের অভাব, অন্যদিকে পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় শিশু ও বৃদ্ধদের অনেকেই সর্দি, জ্বরে ভূগছেন। চা বাগানের শ্রমিকরা শীত নিবারনে খড়খুটো জ্বালিয়ে সময় পার করেন।
অটোরিক্সা চালক আব্দুল খালিক, দিনমজুর অনুরোধ রবিদাস বলেন, শীত বেড়ে গেছে। আর শীত বেড়ে যাওয়ায় মানুষজন ঘর হতে কম বের হচ্ছেন। ফলে আয় রোজগার কমে গেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া ও পল্লী চিকিৎসক পিন্টু দেবনাথ জানান, শীত বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতাল ও প্রাইভেট চেম্বারে এসব রোগীই বেশি আসছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শ্রীমঙ্গল অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, বুধবার শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এই তাপমাত্রা আরও নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম