ফাইল ছবি
বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য তহবিল গঠন করেছে জাতিসংঘ। বুধবার সংস্থাটির নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক।
তিনি বলেছেন, আমরা আপনাদের জানাতে চাই বাংলাদেশে জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী জয়েস মসুয়া জাতিসংঘের নিজস্ব সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড (সিইআরএফ) থেকে ৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছেন। বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে ডুজাররিক আরও বলেন, গত মাসের শেষ থেকে বন্যায় বাংলাদেশে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই তহবিলের অর্থ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ব্যয় করা হবে। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৩ হাজার ৪০০টি আশ্রয়কেন্দ্রে এই আকস্মিক বন্যায় ৫ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। এছাড়া বন্যার ফলে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, বন্যায় ৭ হাজারের বেশি বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া স্মরণকালের এই ভয়াবহ বন্যায় ১৫৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের পূর্বাঞ্চলে যে মানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে কাজ করছে জাতিসংঘ। মানবাধিকার কর্মী এবং সরকারের নেতৃত্বে যে কাজ চলছে তাতেও সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছে সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্র।
তিনি বলেছেন, আমরা এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলোকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। এ বছরের মধ্যে সম্প্রতি বন্যাকে জাতিসংঘ চতুর্থ বড় জলবায়ু দুর্যোগ বলে চিহ্নিত করেছে। মে মাসের শেষে বাংলাদেশে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। এতে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেমালের আঘাতে ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। রেমালের সে ধকল কাটতে না কাটতেই প্রথমে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং পরে দেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ।