ফাইল ছবি
যশোর: যশোর বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ময়না তদন্তের জন্য মৃত্যুর ৫ মাস ২১ দিন পর মোজাহার মেটাল ওয়াকার্স এ বৈদ্যুতিক শকে নিহত এক শ্রমিকের মহদেহ কবর থেকে তুলেছে পিবিআই যশোর।
ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ, মোজাহার মেটাল ওয়াকার্স এর মালিক ও আসামীদের প্ররোচনায় বাধ্য হয়েই লাশ সুরতহাল ও ময়না তদন্ত না করেই মরদেহ দাফন করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে যশোর সদর উপজেলার গোপালপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে ওই যুবকের মরদেহ তোলা হয়।নিহত ব্যাক্তির নাম মোফাজ্জেল দফাদার (৩৫)। তিনি যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আব্দুল জলিল দফাদারের ছেলে।
পিবিআই যশোরের ইন্সপেক্টর হিরনময় সরকার জানান, নিহত মোফাজ্জেল দফাদারের পিতা আব্দুল জলিলের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ময়না তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এসময় যশোর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহামুদুল হাসান,নরেন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল হাসান, স্থানীয় ইউপি সদস্য ফসিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদি ও নিহতের পিতা আব্দুল জলিল জানান, তার ছোট পুত্র মোজাম্মেল দফাদার চাউলিয়ার ‘মোজাহার মেটাল ওয়াকার্স’এ সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ঐ প্রতিষ্ঠানের অন্য শ্রমিক রূপদিয়া গ্রামের মিনহাজ (৩ নং আসামি) ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ ব্যবহার করতো। সেকারণে তার পূত্র ঐ প্রতিষ্ঠানে ২ মাস কাজ বন্ধ করে অন্যত্র কাজ করতো। পরে অত্র প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক সরদার গোপালপুরের আদর্শ গ্রামের ফজলুল করিমের ছেলে হাসান (১ নং আসামী) ও ঐ প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার একই গ্রামের মইনো দফাদারের ছেলে সোহেল (২ নং আসামী) এর প্ররোচনায় বেশি বেতনের প্রতিশ্রুতিতে, নিরাপত্তার আশ্বাসে ও মিনহাজকে বরখাস্ত করা হয়েছে এসব বললে তার ছেলে গত ২৮ আগষ্ট থেকে আবারো ঔ প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন।
তিনি জানান যে, ৪ দিন কাজ করার পর ১ সেপ্টেম্বর তার পূত্র উক্ত প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য যান। পরদিন ২ সেপ্টেম্বর সকালে আসামী সোহেল তার বড় ছেলে আব্দুর রাজ্জাককে মোবাইলের মাধ্যমে তার ছোট পূত্রের মৃত্যুর খবর জানান।
তার দাবী, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পূত্রের মৃতদেহ না পেলে অত্র প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার একই উপজেলার ঘোড়াগাছা গ্রামের খালিদ (৬ নং আসামী) এর দেওয়া তথ্যমতে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মৃতদেহ সনাক্ত করেন। এসময় তার অন্য পূত্র রুবেল হোসেন লাশের ছবি তুলতে চাইলে হাসান ও খালিদ বাঁধা দেন। পরে মোজাহার মেটাল ওয়াকার্স এর মালিক তাদেরকে ময়না তদন্ত না করার পরামর্শ দিয়ে লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় আসামীদের চাপে পড়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করেন তারা।
সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ন্যয়বিচার দাবী করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী।