![সারাদেশে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি সারাদেশে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি](https://www.bahumatrik.com/media/imgAll/2018September/pbs-2407011536.jpg)
ছবি- সংগৃহীত
দুই দফা দাবিতে সারা দেশের ৮০টি পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করছেন। সোমবার সকাল থেকে দেশের সবগুলো সমিতিতে একযোগে এ কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরি বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখেই কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। অনির্দিষ্টকালের এ কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে বিদ্যুৎসেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তাদের দুই দাবি হলো- পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণ।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক প্রায় ১২ কোটি। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড়-বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়ে দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন । কিন্তু সমিতির তদারকি প্রতিষ্ঠান পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) দ্বৈতনীতির কারণে ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ৮০টি পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
তারা জানান, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদ-পদবী, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন তারা। শুধু তাই নয়, বিআরইবির অদক্ষতা ও নিম্নমানের সামগ্রীর কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিতরণ লাইনে ব্যবহৃত নিম্নমানের মালামালের জন্য উত্তম গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না।
আন্দোলনকারীরা আরও জানান, এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের দাবিতে চলতি বছরের ৫ মে থেকে কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর গত ১০ মে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুরোধে সমস্যা সমাধানে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসার আশ্বাস দেওয়া হয়। এরপর আমরা কাজে ফিরে যাই। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী দাবি দাওয়া উল্লেখ করে সারাদেশের ৮০টি পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির ৩৭ হাজার ৫৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি বিদ্যুৎ বিভাগসহ বিআরইবিতে জমা দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে বোর্ডের প্রতি অনাস্থা জানানো হয়। কিন্তু ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় নাই।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, এছাড়াও সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাসপেন্ড, সংযুক্ত ও স্ট্যান্ডরিলিজের যেসব সদস্য আছেন, সবাইকে এক সপ্তাহের মধ্য অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও সাসপেন্ড দুইজন ও স্ট্যান্ডরিলিজ দুইজনকে এখনও অব্যাহতি দেওয়া হয় নাই। তাই, বাধ্য হয়ে আবারও পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিপীড়ন ও শোষণ থেকে বাঁচতে কর্মবিরতিতে যেতে হলো।
সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘোষিত দুটি দাবি হলো- ১. স্মার্ট ও টেকসই বিদ্যুৎব্যবস্থা বিনির্মাণে আরইবি-পিবিএস একীভূত করণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে। ২. ভবিষ্যত বিদ্যুতব্যবস্থা সচল রাখতে এবং গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নের জন্য সব চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে।
আজ সোমবার সকাল থেকে সারাদেশে সবগুলো পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করলেও জরুরি বিদ্যুৎসেবা চালু রয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।