ছবি- সংগৃহীত
টানা কয়েকদিন ধরেই রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল, পথযাত্রা, সড়ক অবরোধ করে কোটা সংস্কারের দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এবার বৈষম্যবিরোধে ঐক্যবদ্ধ ছাত্রসমাজ রোববার সারা দেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ কর্মসূচির নাম দেয়া হয়েছে ‘বাংলা ব্লক’।
শনিবার রাজধানীর শাহবাগ থেকে বাংলা ব্লক কর্মসূচির (বাংলা ব্লকেড) ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শাহবাগ থেকে ঘোষিত কর্মসূচিতে বলা হয়,রোববার বিকেল ৩টায় শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ব্লক দেবেন ছাত্ররা৷ এছাড়া দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে অবস্থান নেবেন শিক্ষার্থীরা৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা যেমন নীলক্ষেত, চানখারপুল, শাহবাগ ও হাতিরপুলসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেবেন তারা।
হাইকোর্টের রায়ের পর কোটা ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক ও বিক্ষোভ নতুন করে ডালপালা মেলেছে। প্রতিবাদ জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও ২০১৮ সালের মতো আন্দোলনে নেমেছেন। মাঝে সরকারকে জুন মাস পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন আন্দোলনকারীরা। তবে কোনো আশ্বাস না পেয়ে এবার সারা দেশে একযোগে একই সময়ে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
এদিন শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর ছিল রাজপথ৷ দুপুরের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে থামে।
হঠাৎ করেই রাস্তার মাঝে অবস্থান নিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা৷ পুলিশ বাধা দিলে তাদের সরিয়ে দিয়েই রাস্তায় বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা৷ এ সময় শাহবাগ দিয়ে সবগুলো সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ৷ একই সাথে পথ বন্ধ করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে নানা শ্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
ঘণ্টাখানেক অবস্থানের পর রোববার ঢাকার বিভিন্ন সড়কের মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা দেন তারা। কোটা পদ্ধতি সংস্কার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
আন্দোলনকারীরা বলেন,সরকার ভেবেছে আমরা এক-দুইদিন আন্দোলন করব এবং একদিন ক্লান্ত হয়ে থেমে যাব। আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদেরকে যদি বাধ্য করা হয়, আমরা প্রয়োজনে সারা দেশে হরতালের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আজকের ছাত্র সমাজকে আদালতের মুখোমুখি করা হচ্ছে, এ দায় নির্বাহী বিভাগ এড়াতে পারে না। ঢাকা শহরের শাহবাগ, নীলক্ষেত, মতিঝিল, চানখারপুল, সায়েন্সল্যাবসহ প্রতিটি পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন এবং বাংলা ব্লক কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরে শিক্ষার্থীরা সব মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। তবে ওই বছর ব্যাপক আন্দোলনের মুখে কোটা বাতিল করা হয়। গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ রায়ের পর আবারও ফুঁসে উঠেছে ছাত্র সমাজ।