ফাইল ছবি
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি মন্তব্যের পর ভারত ঢাকাকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়টি উল্লেখ করে জানান, নয়াদিল্লি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, প্রতিবেশী দেশের নেতাদের দায়িত্বশীল মন্তব্যের গুরুত্ব মনে রাখা উচিত। আমরা বাংলাদেশের কাছে আমাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমরা জানি যে ওই পোস্টটি ইতোমধ্যে মুছে ফেলা হয়েছে, তবে সব পক্ষকে জনসমক্ষে মন্তব্য করার সময় আরো সতর্ক এবং দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো যোগ করে, এই ধরনের মন্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে এবং তাই সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চায় এবং আমরা বারবার এই আগ্রহ প্রকাশ করেছি। তবে, এ ধরনের মন্তব্যের মাধ্যমে আরো দায়িত্বশীল আচরণ করার প্রয়োজনীয়তা ওঠে আসে।
এছাড়া, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং রাজ্যসভায় দেয়া এক বক্তৃতায় বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো সেখানে বসবাসরত হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষা করা।
গত আগস্টে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর ফলস্বরূপ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। পরে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এই সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ সামনে আসে, যা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।