ফাইল ছবি
জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহার এবং দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতা ও ছুটি না পাওয়ায় ক্ষোভে মাস্টারসহ সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে আকাশ মণ্ডল ইরফান। বুবুধবার দুপুরে কুমিল্লায় র্যাব-১১ কুমিল্লা সিপিসি-২ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মেজর সাকিব হোসেন।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ইরফান জানিয়েছে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কোনো প্রকার বেতন ভাতা দিতেন না। এমনকি তিনি দুর্ব্যবহারও করতেন। এসবের ক্ষোভ থেকে আকাশ মণ্ডল ইরফান সবাইকে হত্যা করেন।
র্যাব জানায়, জাহাজের বাজার করার জন্য ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে তিনি ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় যা আগেই জাহাজে ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল।
র্যাবের মেজর সাকিব বলেন, হত্যার দিন রাতের খাবার রান্নার সময় ইরফান জাহাজের বাবুর্চির অগোচরে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। সেই খাবার খেয়ে সবাই অচেতন হয়ে পড়লে হাতে গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন ইরফান।
ইরফানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ইরফান যখন সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে তখন জাহাজ মাঝ নদীতে নোঙর করা ছিল। পরে সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজে ট্রলার চালিয়ে হাইমচর এলাকায় এসে অন্য ট্রলার দিয়ে তিনি পালিয়ে যান।
র্যাবের ভাষ্য, মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার সময় অন্যরা দেখে ফেলায় ইরফান জাহাজের সবাইকে হত্যা করেন।
খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন - মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী। এছাড়া আহত ব্যক্তি হলেন সুকানি জুয়েল।
এর আগে চাঁদপুরের মেঘনায় সার বোঝাই কার্গো জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় ইরফান নামে একজনকে আটক করেছে র্যাব। বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে দিকে মেঘনা নদীর হরিণা এলাকায় থেমে থাকা একটি জাহাজ থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জাহাজটিতে ডাকাতরা হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।