ফাইল ছবি
বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর রাতে বা থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে না। তবে দিনটি উপলক্ষে একাধিক তারকা হোটেল কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতে ইকো ট্যুরিজম পল্লির মারমেড বিচ রিসোর্টে রয়েছে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব। এ অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন দেশি-বিদেশি একাধিক তারকা সংগীতশিল্পী।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে সৈকতের কোথাও উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠান থাকছে না। সৈকতে আতশবাজি, পটকা ফুটানো নিষিদ্ধ। তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে একাধিক তারকা হোটেল কনসার্টের আয়োজন করছে। সেখানে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণভাবে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজন সম্পন্ন করতে গত ২৪ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতা ও হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেছে জেলা প্রশাসন। পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং শান্তিপূর্ণভাবে বর্ষবিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার হোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, এখানে পাঁচ শতাধিক হোটেল রিসোর্ট গেস্টহাউস কটেজের এখন কোনো কক্ষ খালি নেই। হোটেল রিসোর্ট গেস্টহাউসে দৈনিক ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৪০ হাজার। এখন একটি কক্ষে গাদাগাদি করে পাঁচ-সাতজন করে থাকছেন। এ রকম অবস্থা থাকবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতে ইকো ট্যুরিজম পল্লির মারমেইড বিচ রিসোর্টে এমতেই বিদেশি পর্যটকদের সমাগম থাকে বেশি। এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটে মারমেইড কর্তৃপক্ষ আয়োজন করতে যাচ্ছে, বিদেশি তারকা শিল্পীদের নিয়ে বর্ষবিদায় ও বরণ উৎসব। রিসোর্টের অভ্যন্তরে ৩০০ ফুট লম্বা সুইমিংপুলের পশ্চিমপাশে উম্মুক্ত বালিয়াড়িতে এরইমধ্যে উৎসবের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন মঞ্চ। সমুদ্রের পানিতেও ভাসছে বিজলিবাতির নৌকা, কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রতিকৃতি। পুরো রিসোর্টে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। এখানে পর্যটকদের থাকার জন্য কটেজ আছে ৩৩টি।
মারমেইড ইকো-ট্যুরিজম লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার (মার্কেটিং এন্ড সেলস) রেক্সি ডমিনিক গমেজ বলেন, কক্সবাজারে এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকের ঢল নেমেছে। তবে এখানে সমুদ্রসৈকত ছাড়া বিনোদনের তেমন কিছু নেই। কক্সবাজারকে জনপ্রিয় করে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে মারমেইড কর্তৃপক্ষ বিদেশি তারকা শিল্পীদের নিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব আয়োজন করছে। রিসোর্টের অতিথি ছাড়াও পর্যটকদের উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে।
শহরের কলাতলী এলাকায় অবস্থিত তারকা হোটেল সিগালের সুইমিংপুলের পাশের খোলা বারবিকিউ মাঠে থার্টি ফাস্ট নাইটে থাকছে লাইভ মিউজিকের আয়োজন। বিকেল চারটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এখানে স্থানীয় শিল্পীরা গান পরিবেশন করবেন বলে জানান হোটেলের সিইও শেখ ইমরুল হাসান ছিদ্দিকী। এছাড়া তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস, সায়মান বিচ রিসোর্ট, হোটেল কক্সটুডেসহ কয়েকটি রিসোর্ট নিজস্ব অতিথিদের জন্য বর্ষবিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে বলে জানা গেছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ থেকে বিরত থাকতে প্রচার চালানো হচ্ছে। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।