ফাইল ছবি
বাংলাদেশে সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৩ লাখ ৫২ হাজার। আর নির্বাচন কমিশনের সবশেষ তথ্যমতে, দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন। নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন। দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ভোটার তালিকা নির্ভুল করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি জানান, হালনাগাদের আগে ভোটার সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। নতুন যুক্ত হওয়া ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫১৬ জন, নারী ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৬২ জন। নারীর চেয়ে পুরুষ ভোটার বৃদ্ধির হার প্রায় দ্বিগুণ। ভোটার বাড়ার হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আইন অনুযায়ী চলতি বছর হালনাগাদের যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হবে, তা অন্তর্ভুক্ত করে হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি। আর দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে চূড়ান্ত তালিকা হবে আগামী বছরের ২ মার্চ। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে, যা শেষ হবে ৩০ জুন। দাবি ও আপত্তি জানানোর শেষ তারিখ ১৭ জানুয়ারি। যদি এর আগে জাতীয় নির্বাচন হয়, প্রয়োজন হলে অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
গতকাল যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তা সঠিক দাবি করে ইসি আবুল ফজল বলেন, বিতর্কিত ভোটার তালিকা আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় দেখেছি। আমাদের বাড়ি বাড়ি যাচাই করতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সেই বিতর্কের অবসান ঘটানো। ভোটার তালিকা বিতর্কিত হওয়ার পেছনে তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছে কমিশন- মৃত ভোটারদের তালিকায় থাকা, দ্বৈত ভোটার তালিকা এবং বিদেশি নাগরিকের ভুয়া ভোটার তালিকাভুক্তি।
ডিসেম্বরের শেষে সংসদ নির্বাচন হলে যাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার করা হচ্ছে, তারা ভোট দিতে পারবেন কিনা এবং আইন সংশোধন করে তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আবুল ফজল বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে আশা করছেন। ভোটার তালিকা প্রণয়ন করাও এক ধরনের প্রস্তুতি। আমাদের এ ভোটার তালিকা সন্নিবেশ করতে আইনি কোনো জটিলতা নেই। তফসিল ঘোষণার আগে একটি তালিকা প্রকাশ হবে। সেই তালিকায় আমরা তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করব, যারা এ বছরে ভোটার হবেন, অর্থাৎ ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ হবে।
ভোটারের সর্বনিম্ন বয়স ১৭ করার বিষয়ে কমিশনের ভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৭ বছর বয়সে ভোটার নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা তার ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে আইন সংশোধন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, সঠিক ও নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মাঠ কর্মকর্তাদের সময়মতো পরিকল্পনা নিয়ে কার্যক্রম বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের প্রধান লক্ষ্য হলো জাতিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া। এ জন্য নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।