Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১৪ ১৪৩২, সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫

মধুটিলা ইকো পার্ককে আরো পর্যটনবান্ধব করতে উন্নয়ন জরুরি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

প্রিন্ট:

মধুটিলা ইকো পার্ককে আরো পর্যটনবান্ধব করতে উন্নয়ন জরুরি 

ছবি- সংগৃহীত

ভারতের সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার  নালিতাবাড়ি উপজেলার মধুটিলা ইকোপার্কটি
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি । সেখানে শাল-গজারি আর নানা প্রজাতির গাছগাছালি ঘেরা উঁচু-নিচু টিলা ও পাহাড় ভ্রমণ পিপাসুদের মন সহজেই কেড়ে নেয়। যারা একবার সেখানে বেড়াতে যাবেন তাদের বারবার মন চাইবে প্রকৃতি কণ্যা মধুটিলায় আবারও যেতে।

এই মধুটিলা ইকোপার্কটিকে ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের কাছে আরো মনোমুগ্ধকর করতে প্রয়োজন ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা একান্ত জরুরী। সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারও আন্তরিকতার সাথে পদক্ষেপ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন। 

প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে এই ইকো পার্কটিকে আরো আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে 'মধুটিলা ইকো পার্কে সমন্বিত সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়নে উপ-আঞ্চলিক কর্মশালা' শনিবার (২৬ এপ্রিল) ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। 

ময়মনসিংহ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ. ন. ম. আব্দুল ওয়াদুদ এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন কেন্দ্রীয় সার্কেলের  প্রধান বন সংরক্ষক এ. এস. এম. জহির উদ্দিন আকন। 

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইকোপার্ক বিশেষজ্ঞ ডঃ মুহাম্মদ আবু সায়েদ আরফিন খান। সুফল প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আব্রাহাম হোসাইন ও  উপদেষ্টা জহির উদ্দিন আহমেদ।  কর্মশালায় মতামত পেশ করেন আনন্দমোহন কলেজের অধ্যাপক দেবাশীষ চন্দ্র রায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী কামরুল ইসলাম,  টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ সাইদুর রশিদ, ময়মনসিংহের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (সাবেক) একেএম রুহুল আমিন খান ও ইকো পার্কের ইজারাদার মজিবুর রহমান প্রমূখ। 

ইকো পার্কে আসা যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করার এবং পার্কের ভিতরে ও যাতায়াতে প্রয়োজনীয় টুরিস্ট পুলিশ নিয়োগ সহ পর্যটকদের সুষ্ঠু নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তাব করা হয়। 

 ইজারাদার মজিবুর রহমান মধুটিলা ইকোপার্কের বিভিন্ন উন্নয়নসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের আরো উন্নয়ন ঘটাতে নানা প্রস্তাব 
কর্মশালায় উপস্থাপন করেন। এগুলো বাস্তবায়ন হলে পর্যটকদের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।  

 মধুটিলা ইকোপার্কের চার পাশে ১০ ফুট উচ্চতার বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ। (নিরাপত্তার জন্য)।বাউন্ডারী ওয়ালের উপরে ০২ লাইনের কাটাতারের বেড়া নির্মাণ। বাউন্ডারী ওয়ালের চার পাশে ৬-০ প্রসস্থ পাকা রাস্তা নির্মান, (প্রয়োজনীয় কালভার্ড সহ), ঝুলন্ত ব্রীজ: মহুয়া রেষ্ট হাউজ হতে বড় টিলা পর্যন্ত।  ঝুলন্ত ব্রীজ: বড় টিলা হতে ওয়াচ টাওয়ার পর্যন্ত।
ক্যাবল কার: লেকের উপর দিয়ে একটি ক্যাবল কার স্থাপন। সুড়ঙ্গ: পাহাড়ের এক প্রাপ্ত হতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সুড়ঙ্গ পথ নির্মান।

সুইমিং পুল: অত্যাধুনিক ওয়টার স্লিপার, ঝড়না, ড্রেস রুম, ওয়াস রুমসহ দৃষ্টিনন্দন সুইমিং পুল নির্মাণো।

বিভিন্ন টিলা ও দর্শনীয় স্থানে বিড়ল/বিপন/বিলুপ্ত প্রাণীর দৃষ্টিনন্দন ভাষ্কর্য নির্মাণ।
প্রতিটি পাহাড়ে দর্শনার্থীদের নির্বিঘ্ন চলাচলের জন্য পুরাতন পায়ে চলা পথ মেরামত, সংস্কার ও প্রয়েজনীয় নতুন পায়ে চলা পথ নির্মান।

লেকে স্পীট বোট চালানোর উপযোগী করে লেক খনন, সম্প্রসারণ, দৃষ্টিনন্দন করা।
একটি মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন ইকোরিয়াম স্থাপন করা।

শিশু পার্কের জন্য শিশুদের জন্য অত্যাধুনিক নাগরদোলা নির্মাণ। উন্নত মানের আধুনিক স্লিপার নির্মাণ। শিশুদের বিনোদনের জন্য বৈদ্যুতিক ট্রেন স্থাপন।

ইজারাদার মজিবুর রহমান মধুটিলা ইকোপার্কের বিভিন্ন উন্নয়নসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের আরো উন্নয়ন ঘটাতে দেয়া প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নে বন বিভাগের কর্মকর্তাগণ বিশেষ গুরুত্ব দেন। 

শেরপুর জেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁওয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারিভাবে মধুটিলা ইকো পার্ক। মধুটিলা ইকোপার্কে শোভাবর্ধনকারী ও বিরল প্রজাতির বৃক্ষের বনায়নের পাশাপাশি আছে বিশ একরের ঔষধি বৃক্ষের বনায়ন। এছাড়া রয়েছে রেস্ট হাউজ, বাসগৃহ, বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতি, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, আকর্ষণীয় রাইড, স্টার ব্রিজ, ক্যান্টিন, মিনি চিড়িয়াখানা, কার পার্কিং এবং বসার স্থান। মধুটিলার লেকে ঘুরে বেড়ানো জন্য ৫ টি দেশীয় নৌকা ও ৩টি প্যাডেল বোট রয়েছে। সবুজের সমারোহ আর পাহাড়ের হাতছানিতে প্রতি বছর সারাদেশ থেকে সৌন্দর্য্য প্রিয় মানুষ মধুটিলায় বেড়াতে আসেন।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer