![রিমালের প্রভাবে ময়মনসিংহের ৪৭ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন রিমালের প্রভাবে ময়মনসিংহের ৪৭ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন](https://www.bahumatrik.com/media/imgAll/2018September/my-2405272104.jpg)
ছবি- সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ময়মনসিংহ অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) প্রায় ৪৭ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সোমবার দুপুরের পর থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাতটা) টানা দমকা ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে জনজীবনে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও গাছপালা, ফসল শাকসবজি ও বাড়ি ঘরের ক্ষয়ক্ষতিরও খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, সোমবার দুপুর থেকে ময়মনসিংহ অঞ্চলে ঝড়ের কারণে বিভিন্ন বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন বন্ধ রয়েছে। গাছের ডাল পালা পরে অনেক লাইন ছিড়ে গেছে। এগুলো মেরামতে কাজ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন সর্বদা লাইন মেরামতে দিনরাত কাজ করছেন। ঝড় থামার পর পরিস্থিতি ভালো হলেই পুনরায় সঞ্চালন লাইন বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। ময়মনসিংহ অঞ্চলে সাড়ে বারো শত মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে গতকাল সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত বিদ্যুতের লোড দেওয়া হয়েছে মাত্র দেড়শ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের সমস্যার কারণে বিদ্যুতের লোড দেওয়া যাচ্ছে না।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ময়মনসিংহ অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল করিম জানান, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ সুনামগঞ্জ গাজীপুর টাঙ্গাইল সিরাজগঞ্জ কুড়িগ্রাম জামালপুর ও শেরপুর সহ নয়টি জেলার পল্লী বিদ্যুতের ৩৮ লাখ গ্রাহক রয়েছে। তন্মধ্যে বিভিন্ন স্থানে মাত্র এক লাখ গ্রাহকদের নানা সময়ে বিদ্যুৎ দেওয়া যাচ্ছে। গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ না পাওয়ায় অত্র অঞ্চলের ৩৭ লাখ গ্রাহক সোমবার সকাল থেকে রাত অবধি বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে। গ্রাহকরা তাদের দুর্ভোগের কথা আমাদেরকে জানালেও ঝড়ের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আমাদের অপারগতা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। ঝড়ের পরিস্থিতি উন্নতি ঘটলেই পুনরায় বিদ্যুৎ দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
সোমবার সকাল ৬টা ১২ মিনিট থেকে বাতাসের সঙ্গে শুরু হওয়ায় এই বৃষ্টি এখনও চলছে। তবে এই ঝড়-বৃষ্টিতে ময়মনসিংহের কোথাও কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে চলমান বৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ মানুষ বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। তবে অনেকেই কাকভেজা শরীরে নিজ নিজ কাজে ছুটতে দেখা গেছে।
এ সময় শ্রমজীবীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে দেখা গেছে।ময়মনসিংহ আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, সোমবার সকাল ৬টা ১২ মিনিট থেকে ময়মনসিংহে ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
এতে ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৬ নটিকেল।আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. মনির হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ময়মনসিংহে ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। চলমান এই ঝোড়ো বৃষ্টি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মাঝারি ধরনের বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতও হতে পারে। তবে সোমবার রাতে তাপামাত্র দিনের চেয়ে দুই থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
এ বিষয়ে নগরীর চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মুকুল শাহরিয়ার বলেন, বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি থাকার কারণে সড়কে যানবাহন কম। এ সুযোগে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন যান চালকেরা
তবে এই অভিযোগ স্বীকার করে অটোচালক মো. আলী হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। একটু বেশি আয় না হলে কষ্ট করে লাভ কি। তবে যাত্রীদের বলেই আমি দুই চার টাকা করে বেশি নিচ্ছি।