ফাইল ছবি
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কয়েক দশক ধরে বিশ্বের সাগর-মহাসাগরের রং ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে। গত ২০ বছরে এ পরিবর্তন আরও স্পষ্ট হয়েছে। যদিও সমুদ্রসৈকত থেকে খালি চোখে এ পরিবর্তন বোঝা যায় না, বিমান বা উপগ্রহ চিত্রে তা ধরা পড়ছে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টারসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার অ্যাকোয়া উপগ্রহের তথ্য বিশ্লেষণ করে সমুদ্রের রং পরিবর্তনের কারণ অনুসন্ধান করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানব কার্যক্রমের প্রভাবেই নিরক্ষরেখার আশেপাশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলগুলোর মহাসাগর সবুজ হয়ে উঠছে।
সাগরের সবুজ রঙের জন্য দায়ী ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের মতো ক্ষুদ্র সামুদ্রিক জীব। ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের ক্লোরোফিল তাদের সবুজ রং দেয়। এই জীব সামুদ্রিক খাদ্যশৃঙ্খলের ভিত্তি এবং বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের পরিবর্তন সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে এবং বৈশ্বিক কার্বন চক্রে পরিবর্তন আনতে পারে।
ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টারের বিজ্ঞানী বি বি কায়েল বলেন, মানুষের বিভিন্ন কার্যক্রম পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য এবং প্রতিবেশের উপর প্রভাব ফেলছে। এটি শুধু স্থলজ জীবজগৎ নয়, মহাসাগরীয় পরিবেশেও বড় পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী স্টেফানি ডাটকিউইচ জানিয়েছেন, সমুদ্রের রং পরিবর্তনের বিষয়ে আমরা আগে থেকেই পূর্বাভাস পাচ্ছিলাম। এখন তা বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি। এ পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে গবেষণা এবং ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, সাগর-মহাসাগরের রং পরিবর্তন শুধু একটি ভৌত পরিবর্তন নয়। এটি বাস্তুতন্ত্র, জলবায়ু এবং সামুদ্রিক জীবনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। এ বিষয়টি অবহেলা করলে ভবিষ্যতে পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটতে পারে।