ফাইল ছবি
জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির একাংশের চেয়ারম্যান ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ।
তিনি বলেন, এরশাদের নীতি-আদর্শ, তার চেতনা-প্রেরণা, তার ভাবমূর্তি হচ্ছে জাতীয় পার্টির অস্তিত্ব। সেই অস্তিত্বকে যারা মুছে দিতে চায়, তারা জাতীয় পার্টির পরিচয় দেওয়ার অধিকার রাখে না।শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের এক বর্ধিতসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রওশন এরশাদ বলেন, দ্রব্যমূল্য এখনই সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আর রমজানকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা ওঁৎ পেতে বসে আছে। এক্ষেত্রে সরকারের প্রধান কাজ হবে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্য়ায়ে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের মলাট থেকে পল্লীবন্ধুর ছবি মুছে ফেলা হয়েছে। জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠার পর এবার নির্বাচনে পার্টির প্রার্থীদের পোস্টারে পল্লীবন্ধুর ছবি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার নির্বাচনী পোস্টারে বঙ্গবন্ধুর ছবি রেখেছেন। অথচ জাতীর পার্টির সাবেক চেয়ারম্যানের পোস্টারে পল্লীবন্ধুর ছবি জায়গা পায়নি। এটা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীর মনে আঘাত দিয়েছে, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তারা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টির নিবেদিত প্রাণ অনেক নেতা-যাদের ভোটে জয়লাভের সম্ভাবনা ছিল-এমন সব প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এসব জনপ্রিয় ও যোগ্য নেতা এবং অভিভাবকহীন অসংখ্য নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের বিপদে রেখে আমি নির্বাচনে যেতে পারি না।
তিনি বলেন, আমার ছেলের আসন যদি কেড়ে নেওয়া হয়, তাহলে আমি কি নির্বাচনে যেতে পারি? নিশ্চয় না। তারপরও আমি সব কিছু মেনে নিতে পারতাম- যদি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি না হতো। এটা আমি কীভাবে মেনে নেবো?
জাপার সাবেক এ প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে পার্টিকে উদ্ধারের জন্য আপনারাই প্রথমে উদ্যোগ নিয়েছেন। দলের অগনিত নেতাকর্মীদের একান্ত দাবির মুখে আমি জাতীয় পার্টির চেয়াম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছি। আজ আপনারা আমার দায়িত্ব গ্রহণকে অনুমোদন দিয়েছেন। আপনারাই জাতীয় পার্টির সব ক্ষমতার উৎস। আপনারা যেভাবে চাইবেন-পার্টি সেভাবেই পরিচালিত হবে।
জাতীয় পার্টিতে পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক চর্চা হবে উল্লেখ করে রওশন এরশাদ বলেন, তার জন্য আগামী ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হতে পারে। কোনো ষড়যন্ত্র, কোনো বিভ্রান্তিতে আপনারা কান দেবেন না।
এ সময় তিনি বলেন, ৯ মার্চের সম্মেলন সফল করতে সক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনের জন্য রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া গেছে। আপনারা সকাল ১০টার মধ্যে প্রত্যেক কাউন্সিলর এবং ডেলিগেটদের নিয়ে সম্মেলন স্থলে উপস্থিত হবেন। ওই দিন আপনারাই জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন বলে মন্তব্য করেন রওশন এরশাদ।