ফাইল ছবি
মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির কোনরকম আস্ফালন আওয়ামী লীগ মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোববার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্য আন্দোলনের নেপথ্যে নেতা, মতলববাজ, কুশীলবরা স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিকৃত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, কোটা সুবিধা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা পাবে না তো রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? একথা তিনি যথার্থই বলেছেন।
‘৩০ লাখ শহিদের রক্তস্নাত দেশে রাজাকারের আইন হতে পারে না। দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোনও অপমান বাঙালি জাতি সহ্য করবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় পরাজিত অপশক্তির কোনরকম আস্ফালন আমরা মেনে নেব না।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী বেঁচে থাকতে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত পরাজিত অপশক্তির অপতৎপরতা প্রতিরোধ করা হবে। যে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের মহান আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না, নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিতে গৌরববোধ করে, তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে না?
‘যারা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল প্রতিজ্ঞাকে অবজ্ঞা করে তারা কীভাবে মেধাবী হয়? তারা কীভাবে জাতি কিংবা ছাত্রসমাজের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে?’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে যে কোনও অপশক্তিকে আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবো। এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
‘আন্দোলনের নামে জনজীবনে কোনরকম দুর্ভোগ মেনে নেব না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোন সভা-সমাবেশ আমরা মেনে নিতে পারি না।’
আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের হাত আছে দাবি করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে লক্ষ্য করছি, এই আন্দোলনের কুশীলব জামায়াত-বিএনপিসহ অপশক্তির স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলকে মুক্তিযুদ্ধের অপশক্তির আস্ফালনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দৃষ্টতা কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, অবশ্যই দৃষ্টতা, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। এটা অডিসিটি অব হায়েস্ট অর্ডার।
প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে আন্দোলনকারীরা এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা চরম দৃষ্টতা।
রোববার রাতে ছাত্ররা নিজেদের রাজাকার বলে স্লোগান দেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কতিপয় নেতারা যেসব বক্তব্য রেখেছে, তার জবাব দেওয়ার জন্য, আত্মস্বীকৃত রাজাকার, যারা নিজেদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছে তার জবাব দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট।
‘ছাত্রদের বিষয় ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমিত থাকবে। আমরা দেখি রাজনৈতিকভাবে কারা প্রকাশ্যে আসে, তখন দেখা যাবে। আমরাও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।’