ছবি- সংগৃহীত
কক্সবাজারের শহরে ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ’ ঝটিকা মিছিল বের করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের মামলায় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভাঙচুর করে জনমনে ত্রাস সৃষ্টি ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করার অপরাধে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাকির হোসাইন বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটিতে ৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। যারা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানান কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন: কক্সবাজার শহরের পেশকারপাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে রুহুল কাদের (৩২), কলাতলী এলাকার জহির আলমের ছেলে পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শফিউল আলম লাকি (২৬), বাহারছড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসাইন (৪৫), নতুন বাহারছড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ তানিম (২১), সমিতিপাড়ার মৃত নুরুল হোসেনের ছেলে মো. আজিজ (২০), ইনানী এলাকার মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন সিকদার (৪০), মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীর আবদুল জব্বারের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান (২৭) ও শহরের কুতুবদয়া পাড়ার আহমদ হোসেনের ছেলে আওয়ামীলীগ নেতা আবদুল জব্বার (৩২)।
ওসি মো. ইলিয়াস খান জানান, আটজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
কক্সবাজারর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাকির হোসাইন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৩০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাহারছড়াস্থ আবহাওয়া অফিসের সামনের সড়কে কক্সবাজার আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী অঙ্গসংগঠনের উশৃঙ্খল নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরোধীতায় স্লোগান দিয়া ঝটিকা মিছিল বের করে।
এ সময় জনগণের মধ্যে ভীতি বা আতঙ্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে সড়কে হ্রাস সৃষ্টি করিয়া যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে যানবাহনের গতিরোধ করে ভাঙচুর করা হয়। এতে উশৃঙ্খল জনতার একাংশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আবহাওয়া অফিস (কেপিআই) ধ্বংসের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করে ব্যানারসহ পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল হতে ভাঙচুর করা অজ্ঞাতনামা গাড়ির কাঁচের একাধিক টুকরা, ফেলে যাওয়া বাঁশের ছয়টি লাঠি, পাঁচটি লোহার রড উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্য আসামিরা হলেন: শহরের তারাবনিয়ার ছড়ার মিজান প্রকাশ বার্মাইয়া মিজান (৩৪), পশ্চিম কুতুবদিয়াপাড়ার আতিকুর রহমান আতিক (২৬), ফরিদ কামাল (২৫), কামরুল ইসলাম (২৮), টেকনিক্যাল রোডের ফরিদ চৌধুরী (২৭), বাহারছড়ার তানভীর হোসেন মুন্না (৩২), নুনিয়ার ছড়ার জাবেদ হোসেন নয়ন (২৭), কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ইরফানুল হক হিমন (২৯), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানিম মোরশেদ (৩৮), বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, কক্সবাজার জেলা শাখা সহ সভাপতি আবুল হাসেম (৪১), সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন সিকদার (৩২), জেলা যুবলীগ নেতা আবদুল হাকিম প্রকাশ নিখিল্লা (৩৫), শ্রমিক লীগের সভাপতি শফিউল্লাহর ছেলে জিসান (২০), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইসতিয়াক আহমেদ জয় (৪০), জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৩৯)।
এ ছাড়া আরও আসামিরা হলেন: ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন (৩৪), যুবলীগ নেতা আব্দুল খালেক (২৮), কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ জাকের (৩৫), বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মোহাম্মদ শুভ (৩৪), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মোনাফ সিকদার (৩৫), জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আদনান মারুফ (৩২), যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর জাবেদ মুহাম্মদ কায়সার নোবেল (৩৯), যুবলীগ নেতা আমির হোসেন (৪০), পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর (৪০), যুবলীগ নেতা মাসেকুর রহমান বাবু (৩৭), যুবলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর (৪৫), জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান (৫৫), আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র মাহবুব রহমান মাহবুব (৪৫), যুবলীগ নেতা ও ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান (৪৪), যুবলীগ নেতা রুবাইছুর রহমান (৩৪), ছাত্রলীগ নেতা মুন্না চৌধুরী (৩২)।
আসামিদের মধ্যে অন্যরা হলেন: জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম সাদ্দাম হোসাইন (৩৪), সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক (২৯), ছাত্রলীগ নেতা কায়সারুল আলম মুন্না চৌধুরী (৩৩), পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান তারেক (৩০), সরকার কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্মআহ্বায়ক ইসতিয়াক হোসেন খোকা (২৫), যুগ্মআহ্বায়ক আবরার সাকিব (২৬), যুগ্ম আহ্বায়ক আসিফুল করিম (২৬), ছাত্রলীগ নেতা রিফাদুল আলম রিফাত (২৫), রায়হান ছিদ্দিকী (৩২), মিসকাত (৩৩), আবুল কাসেম জয় (২৮)।