ফাইল ছবি
নতুন খেলা শুরু হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কিছু কিছু দল বলছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায়। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হলে স্থানীয় নির্বাচনে সহিংসতা হবে।
সোমবার ধামরাই বিএনপির সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
আশঙ্কা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার কি জেনে শুনে দেশকে ধ্বংসের দিকে, নৈরাজ্যের দিকে, গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে কিনা! আমরা আশা করি সরকার সে পথ থেকে সরে আসবেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেবে, যেখানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু লোক নির্বাচনকে পেছাতে চায়, তাতে ক্ষমতায় তারা বেশিদিন থাকতে পারবে। নতুন দল করতে পারবে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘অনেকে এখন বিএনপিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, ফ্ল্যার্ট করছে যেন উত্তেজিত হয় বিএনপি, যেনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়। বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়েছে, বলছে বিএনপি কিছুই করেনি। অথচ ফ্যাসিবাদের পতনের ভিত্তি স্থাপন করেছে বিএনপি। বিএনপিকে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করবেন না। বিএনপিকে ঠেকাতে চাইছে, বিএনপিকে ঠেকানো যাবে না। হাসিনা-মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন চেষ্টা করেছিল, পারেনি বিএনপিকে ধ্বংস করতে। কেউ পারবে না।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে, এগুলো জবাব দিতে হবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন, তাদের কাছে চলে যান।
স্বৈরাচার হাসিনার আমলে বিরোধী নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের আমলে নেতাকর্মীদের পালিয়ে থাকতে হয়েছে। ভয়াবহ নির্যাতন থেকে বেগম জিয়াও রেহাই পাননি। স্লো-পয়জনিং দিয়ে বেগম জিয়াকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল, পরিত্যক্ত কারাগারে খুব খারাপ হয়ে যায় বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হাসিনা পালিয়ে গেলে বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত হয় বিদেশে। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন, তিনি সুস্থ হন দ্রুত।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৮৩টি মামলা দেয়া হয়েছিল, যেন তিনি দেশে ফিরতে না পারেন। এখনও মামলা শেষ হয়নি। এখনও কোর্টে যেতে হয় বিএনপিকে। এমন তো কথা ছিল না।’
ফখরুল বলেন, ‘বিএনপিকে ভাঙতে চেয়েছিল, একমাত্র শাহজাহান ওমর ছাড়া কাউকে ভাঙতে পারেনি। আলেম ওলামাদেরও ছাড়েনি। শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এখনও ভুলি নাই। এমনকি নিরপরাধ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিকে নির্বাসিত করতে একটি মাত্র দল ছাড়া অন্য কোনো দল থাকবে না, সে ব্যবস্থা করেছিল আওয়ামী লীগ। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, তারমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করেছে সবার আগে। আওয়ামী লীগের আমলে কোনো নির্বাচন হয়নি। এ সরকারকে অর্থবহ নির্বাচন দিতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।’
‘৩২ নম্বরের ঘটনায় কেঁদে কেঁদে হাসিনা বলছেন, সব ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে, বলছেন তার কী অপরাধ? তিনি এখনও জানেন না তার কী অপরাধ! পুরো জাতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন হাসিনা, দেশকে বিক্রি করে দিয়েছেন, হত্যা করেছেন। তারপরও বলছেন তার কি অপরাধ!’ যোগ করেন ফখরুল।
ফখরুল বলেন, ‘কপাল ভালো আপনাকে হেলিকপ্টারে করে পালাতে বাধ্য করেছিল কেউ। সেনাবাহিনী সেদিন একটি ভালো কাজ করেছিল, সেদিন তাকে বলেছিল, পালাতে হবে না হলে গণভবনে জনগণ কী করবে তা তাদের জানা নেই। পালিয়ে হাসিনা নিজের জীবন বাঁচিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘সেই আওয়ামী লীগের নেত্রী পালিয়ে ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। দেশকে জ্বালিয়ে দিতে বলছে, ধ্বংস করে দিতে বলছে।’
