ছবি: সংগৃহীত
দেশে মারাত্মক আকার আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু সংক্রমণ। করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ডেঙ্গু সংক্রমণে প্রাণহানির এমন ভয়াবহতায় চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে গবেষকদেরও। সম্ভাব্য আরও ভয়াবহতায় মোকাবেলায় সক্রিয় হয়েছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিজ্ঞানীরা।
বুধবার দুপুরে (১১ অক্টোবর ২০২৩) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মলিকুলার এপিডেমিওলজি অফ ডেঙ্গু: বাংলাদেশ পার্সপেক্টিভ‘ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে (৬৬ মহাখালী, ঢাকা) সেমিনারের আয়োজক ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি প্রোগ্রাম। সেমিনারে দেশের প্রতিথযশা কয়েকজন গবেষক ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের উপায় ও প্রাসঙ্গিক অনেক গবেষণা তথ্য উপস্থাপন করবেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি প্রোগ্রামের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুব এইচ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সেমিনারে অংশ নেবেন-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, ওএমসি হেলথকেয়ার লিমিটেডের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. কায়সার মানোর, আইসিডিডিআর বি’র বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যান্সার রিসার্চ অ্যান্ড হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ড. মো. গোলজার হোসেন উজ্জ্বল ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি প্রোগ্রামের প্রভাষক আকাশ আহসেদ।
গবেষকরা মনে করছেন, শুধুমাত্র এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করে প্রাণঘাতী ডেঙ্গুজ্বর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ডেঙ্গুর সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন সুপরিকল্পিত মলিকুলার ডায়াগনস্টিক কিট, ডেঙ্গু ভাইরাসের সেরোটাইপ সনাক্তকরণ, ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা উদ্ভাবন এবং ডেঙ্গু রোগীর সঠিক চিকিৎসা খুবই জরুরি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর দেশে মোট ১ হাজার ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার-মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় আরও ১৩ জনের প্রাণহানির খবর দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৮ হাজার ৬০২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ২ হাজার ৬৮৩ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫ হাজার ৯১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ২৮ হাজার ৭৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮৯ হাজার ৪৬০ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩১৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৮ জন। ঢাকায় ৮৬ হাজার ৭৭ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৯১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।