ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এর পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. তোফাজ্জল ইসলাম। গত ২৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ সিরাজুল ইসলাম তালুকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে ড. তোফাজ্জল ইসলামকে এই পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসা অ্যানিম্যাল সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সাদেক মো. সেলিমের কাছ থেকে সম্প্রতি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. তোফাজ্জল ইসলাম। গ্রামীণ উন্নয়ন ও অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ও সহকারী পরিচালক (আন্তর্জাতিক বিষয়ক) অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল ইসলামসহ অন্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিশিষ্ট জীব-প্রযুক্তি বিজ্ঞানী অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম তাঁর দীর্ঘ গবেষণা ক্যারিয়ারে জিনোম এডিটিং, কৃষিতে ন্যানো প্রযুক্তি, বারমাসি কাঁঠাল ও ইলিশের অন্ত্রের জীবাণুর জীবন রহস্য উন্মোচনের মতো গবেষণাকর্মের জন্য দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন।২০১৬ সালে গমে মহামারী সৃষ্টিকারী ছত্রাক জীবাণুর উৎপত্তিস্থল নির্ণয় করেন এবং আন্তর্জাতিক একটি গবেষকদলকে এর সঙ্গে যুক্ত করে সংকট নিরসনের উপায় উদ্ভাবনে এগিয়ে আসেন। বিজ্ঞান গবেষণার কৃতিত্বের জন্য তিনি বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদক, কমনওয়েলথ ইনোভেশন পুরস্কার, রোটার ফাউন্ডেশনের ভোকেশনাল এক্সিলেন্স পুরস্কার, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পুরস্কার, খাদ্য ও কৃষি পুরস্কার, ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন (ইউজিসি) পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
১৯৬৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শশই গ্রামে জন্ম নেয়া তোফাজ্জল ইসলাম বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর জাপানের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। কীর্তিমান গবেষক হিসাবে তিনি জার্মানির বিশ্বখ্যাত গটিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অসংখ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। ক্রিসপার-কাস মেথড এবং বেসিলি এন্ড এগ্রোবায়োটেকনোলজি নামক দুটি সিরিজ বইয়ের প্রধান সম্পাদক ড. তোফাজ্জল ইসলাম। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. ইসলামের বিজ্ঞান বিষয়ক জনপ্রিয় এবং বৈজ্ঞানিক বহু নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি এবং বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো নির্বাচিত হন তিনি।
একাডেমিক নতুন দায়িত্ব গ্রহণ নিয়ে ড. তোফাজ্জল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বহুলভাবে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে নতুন এই দায়িত্ব সহায়ক হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণালব্ধ উদ্ভাবনকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে এই সংযোগ বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’
‘বিজ্ঞান গবেষণায় আন্তর্জাতিক সংযোগ এই সময়ে এক অবধারিত অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। যে বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই ক্ষেত্রে এগিয়ে, উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার তারাই নেতৃত্ব দেবে। বিগত শতাব্দির সঙ্গে এই শতাব্দির বিজ্ঞান গবেষণার এ এক বড় পার্থক্য। বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে সেই প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে রাখাই হবে আমার বড় কর্তব্য’ -উল্লেখ করেন ড. ইসলাম।