
বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।-ছবি: বহুমাত্রিক.কম
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, স্বামী বিবেকানন্দ তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাস করতেন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠনে তরুণরাই অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারেন।
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন ও ভারতের জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘স্বামী বিবেকানন্দ আমাদের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারের অংশ, তাই আমরা এই মহাপুরুষের জন্মদিন এখানে পালন করছি। তিনি একজন আধ্যাত্মিক প্রতিভাবান ও অকুতোভয় মানবতাবাদীই ছিলেন না; তিনি তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাস করতেন এবং দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনের তরুণদের ভূমিকাকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিতেন।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড.আতিউর রহমান বলেন, ‘স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অজস্র মনীষী-কর্মবীর আছেন, যাঁরা বাংলাদেশ ও ভারতের অখণ্ড সাংস্কৃতিক সম্পদ। আমাদের জাতীয় প্রয়োজনে তাদের সকলের আদর্শ আমাদের সমানভাবে গ্রহণ করতে হবে।’
‘স্বামী বিবেকানন্দ তরুণদের জাগরণের জয়গান গেছেন। তাঁর সুমহান বাণী ও আদর্শ আজকের দিনেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। ঔপনিবেশিক যুগে যেমন করে তিনি স্বদেশি বিপ্লবীদের প্রেরণা ছিলেন, বর্তমানেও তাঁর দেশপ্রেমের আদর্শ গ্রহণ করে তরুণদের দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে’-যোগ করেন ড. রহমান।
অনুষ্ঠানের আলোচক ইতিহাস গবেষক ও বার্তা২৪.কম’র পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম যুব জাগরণে স্বামী বিবেকানন্দের দর্শনের কথা তুলে ধরে বলন, ‘তার মহান বাণী ও দর্শন অনুপ্রেরণা হয়ে পরাধীন ভারতে স্ফুলিঙ্গ হয়ে অজস্র স্বাধীনতা সংগ্রামের সৃষ্টি করেছিল।’
স্বামী বিবেকানন্দ আত্মসমালোচনায় অকপট ছিলেন উল্লেখ করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভারত অমর ভারত’ গ্রন্থে স্বামীজি নিজেই বলছেন আমার মনে হয় দেশের জনগণকে অবহেলা করায় প্রবল জাতীয় পাপ এবং এটাই আমাদের অবনতির অন্যতম কারণ। ভারতের সকল দুর্দশার মূল জনগণের দারিদ্র্য। ভারতের পুরোহিত শক্তি ও পরাধীনতা শত শত বছর ধরে নিষ্পেষিত করেছে। অবশেষে তারা ভুলে গেছে তারাও মানুষ।’
ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক মৃন্ময় চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম দিবসে তার বর্ণাঢ্য জীবন ও মানব সেবা নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন কুমার দেব ও ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের প্রতিনিধি স্বামী দেবধ্যানন্দ মহারাজ। আলোচনা শেষে স্বামী বিবেকানন্দের প্রিয় গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী আনুষ্কা চক্রবর্তী।