ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের প্রভাবশালী দৈনিক একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (২ আগস্ট) ভোররাত ৩ টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
আজাদ তালুকদারের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। অকালপ্রয়াত এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদারের মরদেহ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নেওয়ার পর প্রথম জানাজা বুধবার জোহরের নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরের জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন ও দ্বিতীয় জানাজার জন্য মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে, যেখানে একসময় সরব উপস্থিতি ছিল বলিষ্ঠ এই সাংবাদিকের। দুপুর আড়াইটায় সেখানে দ্বিতীয় জানাজার পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার উত্তর পদুয়ায়। সেখানে আসরের নামাজের পর তৃতীয় জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আজাদ তালুকদার ১৯৭৮ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উত্তর পদুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মৃত খায়ের আহমেদ তালুকদার, মা মৃত জাহান আরা বেগম। ১৯৯৫ সাল থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন আজাদ তালুকদার। তিনি এর আগে একাত্তর টিভি, বৈশাখী টিভি, একুশে টিভি ও আন্তর্জাতিক ফিচার সংস্থা-সান ফিচার সার্ভিসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। এছাড়া কপ-১৭ (ডারবান), কপ-১৮ (দোহা), কপ-১৯ (ওয়ারশো) কাভার করার পাশাপাশি পেশাগত প্রয়োজনে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তরান্বিত করতে আজাদ তালুকদার গণমাধ্যমে তুলে ধরেছেন অনুসন্ধিৎসু তথ্য-উপাত্ত। একাত্তর টিভিতে ‘রাজাকারের রোজনামচা’ শীর্ষক ডকুমেন্টারি তৈরিতে সারথী হয়েছেন তিনি। ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একাত্তর টিভিতে সংবাদ প্রচার ও টক-শোতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে তাদের বিভিন্ন হুমকি ও হামলার শিকার হয়েছেন আজাদ।
২০০৪ সাল থেকে একুশে পত্রিকা সম্পাদনার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সাফল্য নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠান নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আজাদ তালুকদার। সম্প্রতি তিনি লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। ব্যয়বহুল বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কেমো নেয়ার মাধ্যমে দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নেন আজাদ তালুকদার। সম্পাদক আজাদ তালুকদারের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন এবং চিকিৎসায় সহায়তা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।