ফাইল ছবি
ইসরাইলি হামলায় গাজায় আরও ৩২ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (৩০ নভেম্বর) হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। ইসরাইল বলেছে, তারা একজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলায় জড়িত ছিল। খবর আরব নিউজের।
গাজাজুড়ে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত ইসরাইলি সামরিক হামলায় কমপক্ষে ৩২ ফিলিস্তিনির নিহতের নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা। শনিবার গাজার দক্ষিণে খান ইউনিসে ফিলিস্তিনিদের অবস্থানের কাছে একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে ইসরাইল বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা এবং হামাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, আটা নিতে আসা মানুষের ভিড়ের কাছে লক্ষ্যবস্তু করা গাড়িটি নিরাপত্তা কর্মীদের তত্ত্বাবধানে ছিল।
এদিকে গাজা সিভিল ডিফেন্স এবং সরকারি ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, মধ্য গাজায় একটি বাড়িতে ইসরাইলি হামলায় অন্তত সাতজন মারা গেছেন।
সিভিল ডিফেন্স আরও জানিয়েছে যে উত্তর গাজার জাবালিয়ায় হামলায় তাদের এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এর ফলে গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ৮৮ জন সিভিল ডিফেন্স কর্মী নিহত হয়েছেন।
এর আগে ওয়াফা জানিয়েছিল, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি বেসামরিক যানবাহনকে লক্ষ্যবস্তু করে ইসরাইল। এতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি মানবিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের তিন কর্মী নিহত হন। তবে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন এ ঘটনায় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৩৮২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন এক লাখ পাঁচ হাজার ১৪২ জন। এছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরাইলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।