ছবি- সংগৃহীত
গত সপ্তাহের শেষের দিকে একটি অস্থায়ী বিরতি সত্ত্বেও পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কুররাম জেলায় তীব্র সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, কর্তৃপক্ষ এই সংকট সমাধানের চেষ্টা করছেন। এদিকে, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩০ ছাড়িয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুররাম কয়েক দশক ধরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। গত মাসে সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হওয়ার পর হামলার নতুন তরঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ওয়াজিদ হুসেন বলেছেন, গত দেড় সপ্তাহের হামলায় ১৩৩ জন নিহত হয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষ দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে লড়াই বন্ধের প্রচেষ্টা শুরু করেছে। তবে এখনও কোনও অগ্রগতি হয়নি।’
পাকিস্তান সরকারের একটি দল গত রবিবার প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতা করেছে। সশস্ত্র শিয়া ও সুন্নি মুসলমানরা কুররামে জমি ও অন্যান্য স্থানীয় বিরোধ নিয়ে কয়েক দশক ধরে উপজাতি ও সাম্প্রদায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত রয়েছে।
প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ মৃতের সংখ্যা ৯৭ বলে উল্লেখ করেছে। প্রাথমিক হামলায় বন্দুকধারীরা অধিকাংশ শিয়া গাড়িচালকদের ওপর গুলি চালায়। তখন ৪৩ জন নিহত হন। আর বাকিরা নিহত হয়েছেন প্রতিশোধমূলক সংঘর্ষে।
শনিবার উপজাতি প্রবীণ ও নেতাদের একটি বিশাল সমাবেশের জন্য এলাকা পরিদর্শন করেছেন খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন খান গন্ডাপুর।
শনিবার গভীর রাতে তার কার্যালয় প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে গন্ডাপুর বলেন, ‘যে কেউ অস্ত্র হাতে তুলবে তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তাদের ভাগ্য হবে একজন সন্ত্রাসীর।’
নিরাপত্তা বাহিনী সহিংসতাপূর্ণ এলাকায় থাকবে বলেও জানান তিনি।
বাসিন্দা ও কর্মকর্তারা বলেছেন, কুররামের প্রধান শহর পারাচিনারকে প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারের সঙ্গে সংযোগকারী প্রধান মহাসড়কটি অবরুদ্ধ করা হয়েছিল। এর ফলে আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তর করার কঠিন হয়ে পড়েছিল।
পারাচিনার জেলা হাসপাতালের ডাঃ সৈয়দ মীর হাসান বলেন, ‘পেশোয়ার ও অন্যান্য স্থানে রোগীদের বড় হাসপাতালে পাঠানোর চ্যালেঞ্জের কারণে আমাদের মেডিকেল টিম সার্জারির জন্য দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রায় ১০০ জন আহত রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন তারা। সহিংসতার সময় ৫০টি মৃতদেহ পাওয়ার কথাও জানান তিনি।