Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

মাঘ ১৩ ১৪৩১, সোমবার ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে ১২ শান্তিরক্ষী নিহত

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১০, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

প্রিন্ট:

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে ১২ শান্তিরক্ষী নিহত

ফাইল ছবি

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী ও শান্তিরক্ষীদের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে অন্তত ১২ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। আরও প্রায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘ কর্মকর্তা ও কঙ্গো কর্তৃপক্ষের বরাতে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।

সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে কঙ্গোর নর্থ কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা শহরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম২৩-এর অগ্রযাত্রা থামাতে কঙ্গো সেনার পাশাপাশি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা লড়াই করছে। খনিজ সমৃদ্ধ এই অঞ্চলের বেশিরভাগই এম২৩ দখলে নিয়েছে। 

চলতি মাসের শুরুর দিকে হামলা তীব্রতর করে গোষ্ঠীটি। এ কারণে জাতিসংঘ আরও বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে। এরপর বিদ্রোহীদের দমনে অভিযানে নামে কঙ্গো সেনা ও শান্তিরক্ষীরা। আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান লড়াইয়ে গত শুক্রবার পর্যন্ত অন্তত ১২ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যে ৯ জনই দক্ষিণ আফ্রিকার সেনা যা শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দেশটির সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শান্তিরক্ষীরা বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্য অনুযায়ী গোমায় অগ্রসর হতে বাধা দেয়ার জন্য সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছে। এতে এম২৩ পিছু হটেছে।’

নিহত বাকি তিনজন মালাবির সেনা। মালাবিরে সেনাবাহিনী ও দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘ কর্মকর্তারা শনিবার এক তথ্য নিশ্চিত করেন। মালাবির সামরিক মুখপাত্র জানান, এসএডিসি মিশনে মোতায়েন তাদের তিন শান্তিরক্ষী এম২৩ বিদ্রোহীদের সাথে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন।
 
এদিকে কঙ্গোতে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। কঙ্গো এই বৈঠকের জন্য অনুরোধ করে, যা মূলত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) হওয়ার কথা ছিল।
 
এম২৩ গত সপ্তাহগুলোতে উল্লেখযোগ্য আঞ্চলিক সাফল্য অর্জন করেছে এবং পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমা ঘিরে রেখেছে। শহরটিতে প্রায় ২০ লাখ লোকের বাস এবং এটি নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তার গুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা প্রশাসনিক কর্মীদের মতো কম প্রয়োজনীয় কর্মীদের অস্থায়ীভাবে গোমা থেকে স্থানান্তর করবে।
 
প্রতিবেশী দেশ রুয়ান্ডার সীমান্তবর্তী খনিজ সমৃদ্ধ পূর্ব কঙ্গোতে অন্তত ১০০টি সশস্ত্র গোষ্ঠী নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে এম২৩ অন্যতম প্রভাবশালী গোষ্ঠী। এর ফলে এই অঞ্চলে গত কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলছে। যা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মানবিক সংকট তৈরি করেছে।

কঙ্গোর সরকার ও মিত্র বাহিনী, যার মধ্যে এসএএমআইডিআরসি ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরাও অন্তর্ভুক্ত, এম২৩-এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী, যা এমওএনইউএসসিও বা মনুস্কো নামেও পরিচিত, দুই দশকেরও বেশি সময় আগে কঙ্গোতে প্রবেশ করে এবং এর সেনার সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার।

২০২২ সাল থেকে মনুস্কো মিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছে দেশটির নাগরিকরা। তাদের অভিযোগ, শান্তিরক্ষীরা বহু বছরের মিলিশিয়া সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

২০২৩ সালের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদির সরকার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনকে কঙ্গো সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়। 

এরপর জাতিসংঘ দেশটি থেকে শান্তিরক্ষা মিশন সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়। এমনকি ২০২৪ সালের মধ্যে সব সদস্য দেশটি ছেড়ে যাবে বলেও জানানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত একজন শান্তিরক্ষীও সরানো হয়নি।  

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer