
ফাইল ছবি
তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। চীনের সেনা, নৌবাহিনী এবং রকেট বাহিনীর যৌথ এই মহড়া শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার চীনের সামরিক বাহিনী এই তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
চীনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা তাইওয়ানের চারপাশে যৌথ সেনা, নৌবাহিনী এবং রকেট বাহিনীর মহড়া শুরু করেছে। তারা বলছে, তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কীকরণ এবং শক্তিশালী প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে এই মহড়া।
গত মাসে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বেইজিংকে বিদেশি শত্রু শক্তি বলে অভিহিত করার পর গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত এই দ্বীপটির চারপাশে মহড়া শুরু করল চীনা সামরিক বাহিনী। মূলত তাইওয়ানকে চীন তার নিজস্ব অঞ্চল হিসাবে দেখে থাকে এবং দ্বীপটিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চীন কখনোই শক্তি প্রয়োগের বিকল্পটি ত্যাগ করেনি।
এছাড়া চীন তাইওয়ানিজ প্রেসিডেন্ট লাইকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে মনে করে এবং চীনের সামরিক বাহিনীর ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মহড়ার ঘোষণার একটি ভিডিওতে তাকে কার্টুন পোকা হিসেবে দেখানো হয়েছে যাকে একজোড়া চপস্টিক ধরে জ্বলন্ত তাইওয়ানের ওপরে রাখা হয়েছে।
ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড তার অফিসিয়াল উইচ্যাট সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বলেছে, সমুদ্র এবং আকাশে যুদ্ধ প্রস্তুতি টহল, তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণ ও দখল, সামুদ্রিক এবং স্থল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও রুটে অবরোধ নিয়ন্ত্রণ আরোপের মতো বিষয়ে মহড়ার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, চীনের শানডং বিমানবাহী রণতরী গ্রুপ সোমবার দ্বীপের প্রতিক্রিয়াশীল এলাকায় প্রবেশ করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এর প্রতিক্রিয়ায় তারা সামরিক বিমান এবং জাহাজ পাঠিয়েছে এবং স্থল-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ান এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তার সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে চলেছে... এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রেসিডেন্ট জিনপিং বলেছেন, মূল ভূখণ্ডের সাথে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। এজন্য সামরিক পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টিও খোলা রেখেছে বেইজিং।
অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান। চীনা প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের জবাবে সেসময় তাইওয়ান জানায়, দেশের ভবিষ্যৎ তার জনগণের হাতেই থাকবে। তবে তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে বেইজিংয়ের চেষ্টার কমতি নেই। তাইওয়ান উপত্যাকার চারদিকে সামরিক কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে চীন।